প্রতীকী ছবি।
এত দিন বিবৃতিতে ‘লড়াই’ চলছিল। এ বারে তা জনসমক্ষে। জেলায় যাবতীয় পুরনো ‘নজির ভেঙে’ সমাজ মাধ্যমে একে অন্যকে আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেতারা। ফলে জেলায় দলের শক্তি বাড়ানোর বদলে তা তলানিতে যাবে কিনা, সেই প্রশ্ন এখন কর্মীদের একাংশের মধ্যে। এই নিয়ে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
এ বারে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের অনুগামী বলে পরিচিত, দলের সাধারণ সম্পাদক খোকন মিয়াঁ ফেসবুকে বিঁধলেন মন্ত্রী পরেশ অধিকারী ও উদয়ন গুহকে। ওই দু’জন দলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। রবিবার রাতে তাঁর নিজস্ব ফেসবুক পেজে খোকন লেখেন, “পরেশ অধিকারী, উদয়ন গুহ, মাননীয় আপনাদের সম্বন্ধে অনেক কিছুই বলব আগামিকাল থেকে। আপনারা দু’জন বাচ্চার জন্ম না দিয়েই বাচ্চার বাবা হয়েছেন, তাই না দাদাভাই। খেলা হবেই।” সোমবার খোকনের ওই বক্তব্যকে তুলে ধরে উদয়ন ফেসবুকেই লিখেছেন, “ভাই খেলার আগে আমার নামের বানানটা ঠিক করুন। না হলে লোকে মূর্খ ভাববে। হাজার হোক আপনি তো আমার সহকর্মী। আপনি নাম শোনেননি মাদার টেরেসা জন্ম না দিয়েই হাজার হাজার সন্তানের মাতা ছিলেন।” এর পরে দু’পক্ষের লোকজন একে অন্যকে বিঁধে ফেসবুকে লিখতে শুরু করেন।
খোকন এ দিন জানান, দিন দুয়েক আগে তুফানগঞ্জে পার্থপ্রতিম রায় যে সভা করেন, সেখানে তিনি দলের দুই প্রবীণ নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও বিনয়কৃষ্ণ বর্মণের প্রতি অসম্মানজনক কথা বলেন। সেখানে পরেশ ও উদয়ন হাজির ছিলেন বলে খোকনের দাবি। খোকন বলেন, “পার্থপ্রতিম কমবয়েসি ছেলে। তাঁকে উস্কে দলের প্রবীণ নেতা, যাঁরা শুরু থেকে অনেক সংগ্রাম করে দলকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, তাঁদের অপমান করা হয়েছে। আমরা এমনটা মেনে নেব না।” যদিও খোকন মিয়াঁর বক্তব্যকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে পার্থপ্রতিম শিবির। তাঁদের দাবি, দলের জেলা সভাপতি হিসেবে পার্থপ্রতিমকে অনেকে মানতে চাইছেন না। তাঁরাই দল-বিরোধী কাজ করে দলের ক্ষতি করছেন। উদয়ন বলেন, “এই বিষয়ে যা বলার, দলের অভ্যন্তরে বলব।”
পার্থ বলেন, “অনেকেই দলের বিষয় নিয়ে ফেসবুকে নিজের মতামত প্রকাশ করছেন। দায়িত্বপূর্ণ কর্মীদের কাছে আবেদন করব, ফেসবুকে দলের হয়ে প্রচার করুন। এমন কিছু লিখবেন না, যা নিয়ে দলে বিভ্রান্তি ছড়ায়।” রবীন্দ্রনাথ ও পরেশ এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। দলের কোচবিহার জেলার চেয়ারম্যান বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “বামেদের বিরুদ্ধে লড়াই করে দলকে সংগঠিত করেছি আমরা। সেখানে এমন কিছু বক্তব্য দলের ক্ষতি করছে, যা দেখে খুব কষ্ট হয়।’’