প্রতীকী ছবি।
এনআরসি আতঙ্ক পেয়ে বসেছিল গ্রামে। রেশন কার্ড-আধার কার্ডে নামের অমিল নিয়ে স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই উদ্বেগে ছিলেন। মঙ্গলবার সকালে কাজে বেরিয়ে যান স্বামী। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় স্ত্রী অর্জিনা বিবির।
তাঁদের বাড়ি কোচবিহারের কোতোয়ালি থানার ঘুঘুমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের হাওয়ারগাড়িতে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গৃহবধূর নাম, আর্জিনা বিবি (২৭)। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আধার কার্ড ও ভোটার কার্ডে তাঁদের নাম ভুল রয়েছে। এনআরসি আতঙ্কে সেই ভুল নিয়ে তাঁরা চিন্তায় পড়েছিলেন। পরিবার সূত্রে দাবি, সেই ভুলের জন্য যদি তাঁদের এনআরসি-তে নাম বাদ চলে যায়, তা হলে কোথায় যাবেন! সেই আতঙ্কের জেরেই অর্জিনা আত্মহত্যা করেছেন বলে তাঁদের পরিবারের দাবি। কোচবিহার জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।”
অর্জিনার কাকা-শ্বশুর হাকিমুদ্দিন মিয়াঁ এবং ভাই নাজির হোসেন জানান, আর্জিনার ভোটার কার্ডে নাম আর্জিনা খাতুন। সেখানে তাঁর স্বামীর নাম রয়েছে আনোয়ার হোসেন। আবার আধার কার্ডে ওই গৃহবধূর নাম ছিল আর্জিনা খাতুন বিবি। সেখানে স্বামীর নাম একই রয়েছে। কিন্তু তাঁর স্বামীর নিজের ভোটার কার্ড ও আধার-কার্ডে নাম রয়েছে আনোয়ার মিয়াঁ। এই গোলমালের জন্যই গোটা পরিবার আতঙ্কে। আনোয়ার রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তাই আর্জিনা নিজেই ছোটাছুটি করছিলেন। কিন্তু সমস্যার সমাধান করে উঠতে পারেননি।
আনোয়ার বলেন, “আমাকে শুধু বারে বারে কার্ডের ভুল সংশোধন করার কথা বলছিল। কিন্তু এমন ঘটনা ঘটবে তা ভাবতে পারছি না।” তৃণমূলের কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের নেতা খোকন মিয়াঁ, আজিজুল হকের অভিযোগ, বিজেপি নেতারা এনআরসি নিয়ে হুমকি দিচ্ছিলেন। তাই এমন ঘটেছে।
বিজেপির সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক অবশ্য বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে জানিয়ে দিলেন রাজ্যে এনআরসি হবে না। কিন্তু তৃণমূল এনআরসির নামে মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে। প্রত্যেকটি মৃত্যুর দায় তাদের।’’