শালবনিতে রঙের কারখানা গড়ার কথা বলেছিল জেএসডব্লিউ পেন্টস। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে রঙের কারখানা গড়ার কথা বলেছিল জেএসডব্লিউ পেন্টস। কর্নাটক ও মহারাষ্ট্রের পরে সজ্জন জিন্দলের গোষ্ঠীর সংস্থাটি লগ্নির জন্য এ রাজ্যকে বেছে নেওয়ায়, প্রকল্পকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল বাড়তি উৎসাহ। কিন্তু তাতে জল ঢেলে তারা জানিয়ে দিল বাংলায় এখন কারখানা হচ্ছে না। এমনকি শেষ পর্যন্ত এই লগ্নি রাজ্যে আসবে কি না, সেই সংশয়ও তীব্র হয়েছে।
বাংলায় কারখানা খোলা নিয়ে এখনও পরিকল্পনাই করা হয়নি, শুক্রবার দাবি সংস্থার সিইও সুন্দরেশন এ এস-এর। রং শিল্পের সংগঠন ইন্ডিয়ান পেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের এক সভার পরে তিনি বলেন, “দু’তিন বছর ধরে দেশে রঙের চাহিদা ঝিমিয়ে। ফলে পরিস্থিতিতে নজর রাখছি। তা লগ্নির অনুকূল হলে সিদ্ধান্ত নেব।” তবে সেই সিদ্ধান্ত যে এ রাজ্যের পক্ষে না-ও যেতে পারে সেই ইঙ্গিতও দিয়েছেন সুন্দরেশন। বলেছেন, ‘‘এখন কর্নাটক ও মহারাষ্ট্রে আমাদের রং কারখানা রয়েছে। পরেরটি তৈরি করতে মধ্যপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে একটিকে বাছব। তবে কখনওই শালবনিতে কারখানা তৈরি নিয়ে সময়সীমা দিইনি। সবটা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে। এখন কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ তাঁর ইঙ্গিত, এ ক্ষেত্রে পাল্লা ভারি মধ্যপ্রদেশেরই।
শালবনিতে ইস্পাত কারখানার জমিতে ইতিমধ্যেই সিমেন্ট কারখানা গড়েছে জেএসডব্লিউ। সেখানেই রং কারখানা তৈরির ঘোষণা করেছিলেন শীর্ষকর্তা পার্থ জিন্দল। সুন্দরেশন বলেন, “২০১৮-১৯ নাগাদ এই ঘোষণা হয়। তার পরে কোভিড আসায় ও দেশে রঙের চাহিদা কমায় রাজ্যের প্রকল্পটি নিয়ে এখন ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে না।” সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, শালবনিতে ওই লগ্নি রাজ্যের পক্ষে ইতিবাচক হত। কারণ যা-ই হোক, আপাতত তা তৈরির পরিকল্পনা থেকে সরে আসা শিল্পায়নের পথে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
ওই সভাতেই অবশ্য আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর বিড়লা ওপাসের সিইও রক্ষিত হার্গভে জানান, খড়্গপুরের কারখানায় মার্চের মধ্যে পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু হবে রং উৎপাদন। সূত্রের খবর, তা শুরু হতে পারে জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারি থেকে। তবে কবে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে তা স্পষ্ট করেননি রক্ষিত। উল্লেখ্য, খড়্গপুরের বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকে ৮০ একর জমিতে ১০০০ কোটি টাকার বেশি লগ্নি করে রং কারখানা গড়েছে বিড়লা ওপাস। দাবি, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে প্রায় ২৫০০ কর্মসংস্থান হবে। বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ২৩.৬ কোটি লিটার। হার্গভে জানান, এটি হবে বিড়লা ওপাসের ষষ্ঠ কারখানা। চারটি এখন বাণিজ্যিক উৎপাদন চালায়, একটি থেকে হয় পরীক্ষামূলক উৎপাদন।