টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ। ছবি: পিটিআই।
নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আন্দোলনের জেরে ব্যবসায় বেশ কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছে কোচবিহার।
এমনিতেই এবার দুর্গাপুজোতেও বাজার মন্দা ছিল। দীপাবলিতে তবু কিছুটা কেনাকাটা হয়েছে। তারপরই বড়দিনের আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে অসমে তীব্র আন্দোলন শুরু হতেই ব্যবসায় বড় ধাক্কা লাগে। বাস চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে রয়েছে। হাতে-গোনা ট্রেন চলাচল করছে। নমনি অসম থেকে কেউই প্রায় কোচবিহারে আসছেন না। কোচবিহার থেকে কেউই নমনি অসমের দিকে যাচ্ছেন না। কোচবিহার জেলা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সম্পাদক রাজেন বৈদ বলেন, “নমনি অসমের বাজারের উপর কোচবিহার নির্ভরশীল। এখানে উৎপাদিত কিছু জিনিসের বাজার হল অসম। গন্ডগোল শুরু হওয়ার পর থেকেই সব বন্ধ হয়ে রয়েছে। এখনও সঠিক হিসেব না করলেও ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা হবে।”
ভৌগোলিক দিক থেকে কোচবিহার নমনি অসমের মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। দুই এলাকার বাসিন্দাদের প্রতিদিন যাতায়াত রয়েছে। কোচবিহার থেকে অসমে বেশ কয়েকটি বাস চলাচল করে। নমনি অসমের বাসিন্দারা চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে কোচবিহারের চিকিৎসক ও নার্সিংহোমের উপর নির্ভরশীল। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটার জন্যও বাসিন্দারা এই শহরকেই ভরসা করেন। এই সময়ে কোচবিহার থেকে শীতবস্ত্র থেকে শুরু করে কসমেটিক ও মণিহারি দ্রব্য অসমে যায়। কোচবিহারের শীতলপাটিরও একটি বড় বাজার অসম। শুধু তাই নয়, অসমে ও উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে কোচবিহারের প্রিন্টিং প্রেসেও বরাত আসে। কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক চাঁদমোহন সাহা বলেন, “বড়দিনের মুখে আমাদের লোকসানের মধ্যেই পড়তে হল। প্রায় সব ক্ষেত্রেই ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়েছে। এখন তো যাতায়াত একদম বন্ধই বলা চলে।”
এবারে পুজোর কেনাকাটায় মন্দার প্রভাব ছিল। তাই অন্যবারের তুলনায় বিক্রিবাটা ছিল অনেকটাই পড়তির দিকে। রাসমেলাতেও ব্যবসায়ীদের সেই ধাক্কার মুখে পড়তে হয়। বড়দিনের মুখে তাই আশায় বুক বেঁধেছিলেন তাঁরা। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টে যাওয়ায় সেই আশাতেও জল। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য অনুযায়ী, চলতি গোলমালে পরিবহণ, কৃষিজাত যন্ত্রপাতি, কাপড়, হার্ডওয়্যার, কসমেটিক্স, মণিহারি দ্রব্য, শীতলপাটি, প্রিন্টিং প্রেস, চানাচুর, পানমশলা ও অলঙ্কারের মতো ব্যবসা ক্ষতির মুখে পড়েছে।
কোচবিহার জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা সঞ্জিত পণ্ডিত বলেন, “বনধ উঠলেও গাড়ি চালানোর মতো পরিস্থিতি নেই। কেউই ঝুঁকি নিতে চান না।”