ব্লিচিং পাউডার ছড়ানোর মজুরি নিয়ে বিতর্ক। — ফাইল চিত্র।
ওয়ার্ডে ব্লিচিং পাউডার ছড়িয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলরের মা, বাবা, ভাই এবং স্বামী এবং সে জন্য তাঁরা দু’হাজার টাকা করে মজুরিও পেয়েছেন। জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি পুরসভার সরকারি নথিতে (মাস্টার রোলে) উল্লেখ্ করা হয়েছে এই তথ্য। যদিও অভিযোগ উঠেছে, যাঁদের নাম নথিতেরয়েছে, তাঁরা বাস্তবে কেউ ব্লিচিং ছড়ানোর কাজই করেননি। সদ্যগঠিত ময়নাগুড়ি পুরসভার সব ওয়ার্ডেই পুজোর আগে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হয়েছে। বিতর্ক ছড়িয়েছে এক নম্বর ওয়ার্ডের মাস্টার রোল নিয়ে।
অভিযোগ, ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কোনও আত্মীয়ই ব্লিচিং ছড়ানোর শ্রমিকের কাজ করেননি। তবুও পুরসভার তৈরি মাস্টার রোলে রয়েছে কাউন্সিলরের আত্মীয়দের নাম। দু’হাজার টাকা করে মোট ১০ হাজার টাকা মজুরি দিয়েও দেওয়া হয়েছে। আত্মীয়দের নাম মাস্টার রোলে থাকার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ময়নাগুড়ির এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রিম্পা রায়। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘একটা ভুল বোঝাবুঝির কারণে এই সমস্যা হয়েছে। আবার নতুন করে মাস্টার রোল তৈরি করা হচ্ছে।’’ কিন্তু কার ভুল বোঝাবুঝি? কাউন্সিলর বলেন, ‘‘প্রথমে বলা হয়েছিল, দু’জন শ্রমিক কাজ করবেন। পরে বলা হয়, কাজ করবেন ১০ জন। এ ভাবে সংখ্যা বদলে যায়। এ ভাবেই কোথাও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। খোঁজ নিয়ে দেখুন, নতুন করে মাস্টার রোল তৈরি হচ্ছে।’’
কাউন্সিলররের পাঁচ আত্মীয়ের নামে মাস্টার রোল তৈরির বিষয় নিয়ে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর অভিযোগ, ‘‘ভুয়ো মাস্টার রোল তৈরি করে এত দিন একশো দিনের কাজের টাকা আত্মসাৎ করেছে শাসকদল। এ বার পুরসভার টাকাও কাউন্সিলরেরা নিজেদের আত্মীয়দের নামে নিচ্ছেন। আমরা ময়নাগুড়ি পুরসভার সবরকমের মজুরি দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে তদন্ত চাইছি।’’
মাস্টার রোলে যে সই এবং তারিখ লেখা রয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, গত অক্টোবর মাসে সেটি তৈরি করা হয়েছে। পুরসভা থেকে লাল রঙের ‘সিল’ লাগিয়ে ‘মজুরি প্রদান’ কথাটিও লেখা রয়েছে। তার নীচে অক্টোবর মাসের তারিখ উল্লিখিত রয়েছে। ময়নাগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান অনন্তদেব অধিকারী বলেন, ‘‘আমি মাস্টার রোল দেখিনি। তবে অভিযোগ এলে, নিশ্চয়ই তদন্তের নির্দেশ দেব।’’ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তথা ময়নাগুড়ি ব্লক তৃণমূল সভাপতি মনোজ রায়ের দাবি, ‘‘এটা কোনও আর্থিক নয়ছয়ের বিষয় নয়। হতে পারে, পুজোর আগে শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার জন্য কাউন্সিলর আগে থেকে টাকা দিয়ে দিয়েছিলেন। পরে, সেই টাকা তুলেছেন। তবে মনে হয়, কোনও ভুল বোঝাবুঝিতেই এটা হয়েছে।’’