আদিবাসীদের গণবিবাহের আসর। —ফাইল চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে আদিবাসী গণবিবাহের আয়োজন করছে জেলা পুলিশ। মালদহের আদিবাসী প্রধান ব্লক হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডীতে বসবে সেই গণবিবাহের আসর। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় বুলবুলচণ্ডী গিরিজাসুন্দরী হাইস্কুলের মাঠ পরিদর্শন করেন পুলিশ কর্তারা। পুলিশের দাবি, আদিবাসীদের মধ্যে সরকারি ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পের প্রচারেই এমন আয়োজন হয়েছে। পুলিশের দাবি, আদিবাসীদের রীতিনীতি মেনেই বিবাহ-পর্ব চলবে।
পুলিশের উদ্যোগে আদিবাসীদের গণবিবাহ নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, হিন্দু মহাসভা গণবিবাহের আয়োজন করলে তার অনুমতি দিতে অস্বীকার করে পুলিশ। এখন পুলিশ নিজেই আদিবাসীদের গণবিবাহের আয়োজন করছে। জেলা বিজেপি সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে আদিবাসীদের নিজেদের দিকে টানতে শাসকদল সরকারি টাকা খরচ করে গণবিবাহের আয়োজন করছে। অন্য কোনও সংগঠনকে সেই অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।’’
ওই অভিযোগ উড়িয়ে মালদহ জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ সরলা মুর্মু বলেন, ‘‘বিয়ের নামে বিজেপি আদিবাসীদের ধর্মান্তরণ করছে। পুলিশ প্রশাসনের আয়োজিত গণবিবাহে আদিবাসীদের নিয়ম মেনেই বিবাহ-পর্ব চলবে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস খানেক আগে আদিবাসীদের গণবিবাহ ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল পুরাতন মালদহ। অভিযোগ, হিন্দু মহাসভা তার আয়োজন করেছিল। তা নিয়ে আপত্তি জানায় আদিবাসী সংগঠনগুলির একাংশ। দু’পক্ষে সংঘর্ষও হয়। আদিবাসী সংগঠনগুলির অভিযোগ, গণবিবাহের নামে ধর্মান্তরণ চলছিল। তাই তাতে আপত্তি জানানো হয়েছিল।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে গৌড়বঙ্গ সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে তিনি মালদহে পৌঁছবেন। সেখান থেকে গৌড়বঙ্গের অন্য দুই জেলায় কর্মসূচিতে যোগ দেবেন।
পুলিশ জানিয়েছে, তাদের উদ্যোগে এ বারই প্রথম গণবিবাহের আয়োজন করা হয়েছে। বুলবুলচণ্ডী হাইস্কুল ময়দানে প্রায় ৩০০ জোড়া আদিবাসী তরুণ-তরুণীর বিয়ে দেওয়া হবে। আর সেই অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বিয়ের জন্য রাজ্য সরকার রূপশ্রী প্রকল্পে ২৫ হাজার টাকা করে দেয়। সেই প্রকল্পের কথা আদিবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে দিতেই এমন উদ্যোগ।’’ পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘সামাজিক স্তরে পুলিশ অনেক কাজ করছে। সুসম্পর্ক গড়তে গণবিবাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’