কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। নিজস্ব চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় রাজ্য জুড়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতি’ ও ‘স্বজনপোষণ’-এর ভূরি ভূরি অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। সেই আবহে প্রকল্পের উপভোক্তাদের তালিকায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বাবার নাম ঘিরে নতুন বিতর্ক তৈরি হল কোচবিহারে। তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি, তালিকায় নিশীথের বাবা বিধুভূষণ প্রামাণিকের নামও রয়েছে। এ নিয়ে কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ একটি সাংবাদিক বৈঠকও করেন। তাঁর এই দাবির পরেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। অমিত শাহের ডেপুটি নিশীথের পাল্টা অভিযোগ, দুর্নীতি ঢাকতে শাসকদলই ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁর বাবার নাম আবাস যোজনার তালিকায় ঢুকিয়ে দিয়েছে।
শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে রবীন্দ্রনাথ দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলছে বিজেপি। কিন্তু সেই তালিকায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বাবা বিধুভূষণ প্রামাণিকেরও নাম রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘নিশীথ প্রামাণিকের বিলাসবহুল বাড়ি থাকা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায় তাঁর বাবার নাম রয়েছে।’’ রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘ছ’বছর আগে সমীক্ষা হয়েছে। সেই সময় অনেকের পাকা ঘর ছিল না। এই ছ’বছরে অনেকে পাকা ঘর তৈরি করেছেন। কিন্তু তালিকায় তাঁদের নাম রয়েছে। বিজেপি এ নিয়ে রাজনীতি করছে। এ বার তো নিশীথ প্রামাণিকেরও বাবার নাম উঠেছে। এটা নিয়ে বিজেপি রাস্তায় নামুক।’’
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বাবা বিধুভূষণ প্রামাণিকের নাম। নিজস্ব চিত্র।
রবীন্দ্রনাথের সব দাবিই খণ্ডন করেছেন নিশীথ। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল বেছে বেছে দলের নেতাদের নাম ঢুকিয়েছে আবাস যোজনায়। যোগ্য ব্যক্তিরা বাদ পড়েছেন। এখন ওরা (তৃণমূল) সাধারণ মানুষের প্রশ্নের জবাব দিতে পারছে না। ওদের ম্যানিপুলেট (প্রভাব খাটানো) করার ক্ষমতা রয়েছে। এখন বিজেপি নেতাদের নাম ইচ্ছাকৃত ভাবে আবাস যোজনায় ঢুকিয়ে আমাদের দলের বদনাম করার চেষ্টা চালাচ্ছে। লিস্টে নাম দেওয়ার ক্ষমতা শাসকদলেরই রয়েছে। আমারও বদনাম করার চেষ্টা করছে।’’
কোচবিহারের জেলাশাসককে মেল করেছেন নিশীথ প্রামাণিকের বাবা বিধুভূষণ প্রামাণিক।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আমরা সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করি। তাঁরা এই সুযোগ সুবিধা পান, এটাই চাই। এই খবরটি শোনার পরেই আমরা জেলাশাসকের কাছে মেল করে জানিয়ে দিই, আমরা এই ধরনের কোনও কিছুর জন্যই আবেদন করিনি। এ ধরনের কোনও প্রকল্পের সুবিধা যেন আমাদের না দেওয়া হয়। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বলা হয়েছে। নয়তো আমি আইনি পদক্ষেপ করতে বাধ্য হব।’