—প্রতীকী চিত্র।
আবাস নিয়ে সতর্ক প্রশাসন। সতর্ক শাসক দলও। নবান্ন নির্দেশ দিয়ে জেলা প্রশাসনগুলিকে জানিয়েছে, উপভোক্তারা যাতে নিজের বাড়ি নিজেরাই তৈরি করতে পারেন, সে ব্যাপারে নজরদারি চালাতে হবে। অর্থাৎ তাঁরা যাতে স্থানীয় কোনও প্রভাবশালী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত না হন সে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে প্রশাসনকে। এ বার তৃণমূলও নিচুতলার নেতৃত্বদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছে— আবাসে কোনওরকম ‘মাতব্বরি’ করা চলবে না। সরকার ও উপভোক্তাদের মাঝে ‘নাক গলানো’ যাবে না।
বৈঠক ডেকে আবাস প্রকল্পে দলের অবস্থানের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে তৃণমূলের তরফে পরিষ্কার বার্তা দেওয়া হয়েছে, বাড়ি তৈরি নিয়ে দলের কোনও কর্মী ও নেতা কোনও ভাবেই মধ্যস্থতা করবেন না। দলের নাম ভাঙিয়ে কোনও ভাবে কেউ ওই প্রকল্পে জড়ালে দল কড়া পদক্ষেপ নেবে। শনিবার ঘাটাল টাউন হলে তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার এক বৈঠকে এ সবই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আশিস হুতাইত বলেন, “আবাসের বাড়ি উপভোক্তারা নিজেরাই খরচ করবেন।সমস্যায় পড়লে প্রশাসন সাহায্য করবে। এ ব্যাপারে দলের কোনও কর্মী কিংবা নেতৃত্ব কোনও ভাবে নাক গলাবে না। এটাই দলের অবস্থান। বৈঠক ডেকে সংশ্লিষ্ট সব দলীয় নেতৃত্বদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
আবাস প্রকল্প গত কয়েকবছরে হাজারো ঘটনা পরখ করেছেন উপভোক্তারা। টাকা ঢোকার আশায় এক সময় অনেকেই ঘর ভেঙে বাড়ি তৈরির প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন।পরে টাকা না পেয়ে খোলা আকাশের নীচে বসবাস করার ছবিও সামনে এসেছিল। সবমিলিয়ে আবাস নিয়ে চূড়ান্ত হয়রানি হতে হয়েছিল সংশ্লিষ্ট হাজার উপভোক্তাদের। সব জল্পনা কাটিয়ে রাজ্য সরকার সেই চর্চিত আবাস প্রকল্পের টাকা দেওয়া শুরু করেছে। সরাসরি উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে ঢুকছে টাকা। ব্যস্ত সরকারি আধিকারিকরা। দিনরাত এক করে ব্লক গুলিতে চলছে সেই প্রক্রিয়া।
সরকারি নানা প্রকল্পের ক্ষেত্রে নানা ঘটনায় সরাসরি তৃণমূল ঘনিষ্ঠদের জড়িয়ে থাকার খবর নতুন নয়। তা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিতর্কও কম হয়নি। তা ছাড়া সংশ্লিষ্ট নানা প্রকল্পে তালিকা তৈরি হোক কিম্বা তালিকায় নাম ঢোকানোর নামে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগও পুরনো। এক সময় পুর এলাকায় ‘সবার জন্য বাড়ি’ প্রকল্পে বাড়ি তৈরিতে সাহায্য করার নামে শাসক ঘনিষ্ঠ একাধিক ‘সিন্ডিকেট চক্র’ গজিয়ে উঠার খবর ছড়িয়েছিল। ইট-বালি সরবরাহের নামে সরাসরি শাসক দলের পুর প্রতিনিধি কিম্বা নেতাদের নামও সামনে এসেছিল। এই আবহে আবাস নিয়ে কোনও বিতর্ক চায় না তৃণমূল। মিস্ত্রি খুঁজে দেওয়া কিম্বা বালি চিপস ঘরে পৌঁছে দেওয়ার নাম করে ব্যবসায়িক লেনদেনে কেউ জড়ালে দল যে ছেড়ে কথা বলবে না, সে কথা পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দিয়েছে তৃণমূল।