প্রতীকী ছবি।
হাইকমান্ডের ছাড়পত্র মিলতেই মালদহ জেলায় বিধানসভা ভোটের আসন সমঝোতা নিয়ে সিপিএম তথা বামেদের সঙ্গে দ্রুত আলোচনা সেরে নিতে চায় কংগ্রেস। এ ক্ষেত্রে গত বিধানসভা নির্বাচনের আসন সমঝোতার ‘ফর্মুলা’ মেনেই আলোচনায় আগ্রহী জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। এ ক্ষেত্রে জেলার ১২টি আসনের মধ্যে তিনটি আসন বামেদের ছাড়তে চায় তারা। সিপিএম অবশ্য জানিয়েছে, রাজ্য বামফ্রন্টের নির্দেশ পেলেই তারা আলোচনা শুরু করতে চায়।
গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও সিপিএম আসন সমঝোতা করে লড়াই করেছিল মালদহ জেলায়। সেক্ষেত্রে জেলার ১২টি আসনের মধ্যে ৯টি আসনে প্রার্থী দেয় কংগ্রেস। হবিবপুর ও গাজল আসনে সিপিএম দলীয় প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল এবং ইংরেজবাজার আসনে বাম ও কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রার্থী দাঁড়িয়েছিল। সেবার তৃণমূলের ঝুলি শূন্য করে কংগ্রেস ও বাম জোট ১১টি আসনে জয়ী হয়েছিল। বৈষ্ণবনগর আসনটি পায় বিজেপি। পরবর্তীতে অবশ্য কংগ্রেসের দুই বিধায়ক মোথাবাড়ির সাবিনা ইয়াসমিন ও রতুয়ার সমর মুখোপাধ্যায় তৃণমূলে নাম লেখান।
এ ছাড়া ইংরেজবাজার আসন থেকে জয়ী জোট সমর্থিত নির্দল প্রার্থী নীহার রঞ্জন ঘোষও তৃণমূলে যোগ দেন। এ দিকে, সিপিএমের দুই বিধায়কের মধ্যে গাজলের দিপালী বিশ্বাস প্রথমে তৃণমূলে এবং কয়েকদিন আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। আর হবিবপুরের সিপিএম বিধায়ক খগেন মুর্মু গত লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগদান করেন এবং লোকসভা ভোটে উত্তর মালদহ আসন থেকে জয়ী হয়ে সাংসদও হয়েছেন।
এই রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এবারও মালদহে কংগ্রেস ও বামেরা আসন সমঝোতা করে বিধানসভা ভোটের লড়াই করবে বলে খবর। জেলা কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, এই আসন সমঝোতার ব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার দলের হাইকমাণ্ড ছাড়পত্র দিয়েছে। আর সেই ছাড়পত্র পেতেই বামেদের তথা সিপিএমের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা সেরে নিতে চায় জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব।
কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়েছে, গত বিধানসভা নির্বাচনে ১২টি আসনের মধ্যে যে ৯-৩ ফর্মুলাতে আসন সমঝোতা করে কংগ্রেস ও বাম মিলে লড়াই করা হয়েছিল এ বারও সেই একই ফর্মুলা কার্যকর করতে চাইছে তারা। জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা দক্ষিণ মালদহের সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু) একান্ত আলাপচারিতায় বলেন, ‘‘এবারের বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই অনেক কঠিন। তৃণমূলের পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক শক্তি বিজেপির সঙ্গে এবার লড়াই। এই লড়াইয়ে বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করেই আমরা ময়দানে নামব এবং এ ব্যাপারে আমাদের দলের হাইকমাণ্ড ইতিমধ্যে ছাড়পত্রও দিয়েছে। আমরা যত দ্রুত সম্ভব সিপিএম তথা বামেদের সঙ্গে এই আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা সেরে নিতে চাইছি।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘গত নির্বাচনে আমরা যে আটটি আসনে জিতেছিলাম, সেই আসনগুলিতে আমরা দলীয় প্রার্থী দাঁড় করাতে চাই। এ ছাড়া বৈষ্ণবনগর আসনটি আমাদের হাতছাড়া হয়েছিল, সেখানেও দলীয় প্রার্থী দাঁড় করাতে চাইছি। হবিবপুর, গাজল এবং ইংরেজবাজার আসন বামেদের ছাড়তে চাই। তবে সবটাই চূড়ান্ত হবে বামেদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে।’’ এই আসন সমঝোতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সিপিএমের জেলা সম্পাদক তথা জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘আসন সমঝোতার ব্যাপারে রাজ্য বামফ্রন্টের নির্দেশ পেলেই আমরা কংগ্রেসের সঙ্গে জেলাস্তরে আলোচনায় বসব। সেই নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছি। কী ফর্মুলায় আসন সমঝোতা হবে তা আলোচনার টেবিলেই ঠিক হবে। এ সব নিয়ে আগাম কিছু বলার নেই।’’