আরএসপির মিছিলে নির্মল দাস থাকায় সিপিএমের আলিপুরদুয়ারের নেতার তাতে পা মেলালেন না।
সোমবার জেলা শাসকের দফতরে বামেদের পাঁচ প্রাথী, কংগ্রেসের ২ ও তৃণমূল কংগ্রেসের চার প্রার্থী সহ মোট ১৩ জন এ দিন মনোনয়ন জমা দেন। এ দিন সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ কংগ্রেস প্রার্থী বিশ্বরঞ্জন সরকার আলিপুরদুয়ারের দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বার করেন। পরে কংগ্রেসের মিছিলের সঙ্গে যোগ দেন সিপিএমের কর্মী সমর্থকরা।
প্রায় ঘন্টা খানেক পরে আরএসপির মিছিলে দেখা মিলল না আলিপুরদুয়ারের সিপিএম নেতাদের। ওই মিছিলে আরএসপি প্রার্থী নির্মলবাবু থাকবেন জেনে যাননি সিপিএমের আলিপুরদুয়ারের নেতৃত্ব। তৃণমূলের সঙ্গে লড়াইয়ে যে নির্মলবাবু বিরোধী জোটের ভোট কাটবেন, তা মানছেন জোটের নেতাদের একাংশ।
আরএসপি-র জেলা সম্পাদক সুনীল বণিক বলেন, ‘‘আলিপুরদুয়ার বিধানসভার সিপিএম নেতৃত্ব আরএসপির চার প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দেওয়ার মিছিলে যোগ দেননি। তবে মাদারিহাট বিধানসভার কয়েকজন সিপিএম নেতা আমাদের সঙ্গে ছিলেন। আবার আরএসপির ফালকাটার নেতারা সিপিএমের ফালাকাটার প্রার্থীর মিছিলে ছিলেন। এ দিন আমার সঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদকের দেখা হয়েছে। রাস্তায় কুশল বিনিময় করেছি।’’
সিপিএম নেতারা জানান, নির্মলবাবু থাকাতেই আলিপুরদুয়ারের নেতৃত্ব মিছিলে যোগ দেননি। কারণ, যেখানে সিপিএম জোটের কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে ভোট চাইছে সেখানে নির্মলবাবু যে মিছিলে রয়েছেন, সেখানে তাঁরা কেন যাবেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটাই স্বাভাবিক। আলিপুরদুয়ারে আমরা কংগ্রেসকে সমর্থন করছি। তাই কংগ্রেস প্রার্থীকে নিয়ে আমাদের নেতৃত্ব গিয়েছে।’’
এদিন আরএসপি থেকে আলিপুরদুয়ারে নির্মল দাস,কুমারগ্রামে মনোজ ওরাঁও, মাদারিহাটে কুমারি কুজু, কালচিনিতে ফিলিপ খালকো মনোনয়ন জমা দেন। জোটে কংগ্রেসের তরফে আলিপুরদুয়ারে বিশ্বরঞ্জন সরকার, কালচিনিতে অভিজিৎ নার্জিনারি মনোনয়নপত্র জমা দেন। ফালাকাটায় সিপিমের ক্ষিতীশ রায়, তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে উইলসন চম্প্রমারি, মাদারিহাটে পদম লামা, কুমারগ্রাম জেমস কুজুর ও ফালাকাটায় অনিল অধিকারী মনোনয়ন জমা দেন। তা ছাড়া ফালাকাটায় এক নির্দল প্রাথী ও মাদারিহাটে এসইউসিআইয়ের প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন।
এ দিন বিশ্বরঞ্জন সরকার মনোয়ন জমা দিতে ঢোকেন বেলা ১২টা নাগাদ। তিনি ঢোকার প্রায় ৪০ মিনিট পরে সেখানে আরএসপি নেতৃত্ব মিছিল করে তাদের চার প্রার্থীকে নিয়ে পৌঁছয়। বিশ্বরঞ্জন সরকার মনোনয়ন পত্র জমা দিয়ে রিটার্নিং অফিসারের ঘরে ঢোকার কিছু পরে সেখানে পৌঁছে অন্য ঘরে ঢোকেন নির্মল দাস। তবে দু’জনের দেখা হয়নি। বিশ্বরঞ্জন সরকার বের হবার পর তাঁকে দেখে এগিয়ে আসেন তৃণমূলের ফালাকাটার প্রার্থী অনিল অধিকারী। দু’জনে কুশল বিনিময় করেন।
তবে নির্মলবাবু প্রসঙ্গে বিশ্বরঞ্জন সরকার বলেন, “নির্বাচনের ফল বের হওয়ার পর ওর সঙ্গে দেখা করব। আমার হয়ে এদিন ফরোয়ার্ড ব্লক, সিপিএম ওই সিপিএমের নেতার প্রস্তাবক হয়েছেন।” বিষয়টি শুনে পাল্টা নির্মলবাবু সাংবাদিকদের বলেন, “ও ভোটে হারবে। আমি এখনও কোন নির্বাচনে হারিনি।” বিকেলের দিকে দেখা যায়, কালচিনির তৃণমূল কংগ্রেসের উইলসন চম্প্রমারি ও কুমারগ্রামের মনোজ ওরাঁকে মুখোমুখি দাড়িয়ে থাকতে।