—প্রতীকী চিত্র।
পাহাড় থেকে বিনয় তামাংয়ের নেতৃত্বে কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দল আজ, সোমবার দিল্লিতে যাচ্ছে৷ দলীয় সূত্রের খবর, গত শুক্রবার এআইসিসি নেতৃত্ব বিনয়-সহ ওই নেতাদের ২৫ ডিসেম্বর দিল্লিতে পৌঁছতে বলেছেন। কাল, মঙ্গলবার পাহাড় নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বের বৈঠক করার কথা রয়েছে৷ আগামী লোকসভা ভোটে দার্জিলিং আসনকে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিয়ে দেখে, পরিকল্পনা করে এগোতে চাইছেন দলের নেতৃত্ব। সেখানে পাহাড়ের শাসক থেকে বিরোধী—সব দলকে কংগ্রেসের পাশে থাকার আর্জি জানিয়ে চিঠি দিচ্ছেন বিনয়। গত কয়েক দিনে সেই চিঠি প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা থেকে হামরো পার্টি, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
কংগ্রেসের নেতৃত্ব মনে করছেন, এখনও পাহাড়ে দ্বিমুখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থীর সঙ্গে তৃণমূলের জোটের প্রার্থীর সরাসরি লড়াই হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। বিজেপির সঙ্গে জিএনএলএফ থাকছে তা মোটমুটি পরিষ্কার। তৃণমূলের পাশে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে থাকবে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। সে জায়গায় দাঁড়িয়ে তৃতীয় বিকল্প হিসাবে কংগ্রেস নতুন একটি ফ্রন্ট পাহাড়ে তৈরি করতে চাইছে। সেখানে কংগ্রেস সিপিএম ছাড়াও, হামরো পার্টি, গোর্খা লিগ বা জনমুক্তি মোর্চাকে পাশে পেতে চাইছে। তা হলেই দার্জিলিং আসন ত্রিমুখী লড়াই হয়ে উঠতে পারে।
প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিনয় তামাং বলেন, ‘‘দিল্লিতে আমাদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। আরও চার জন আমার সঙ্গে যাচ্ছেন। পাহাড় নিয়ে আলোচনা হবে। তবে নেতৃত্বের কারা বৈঠকে থাকছেন, তা পরে ঠিক হবে।’’ তিনি জানান, সব দলকে গত কয়েক দিন ধরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। হামরো পার্টির অজয় এডওয়ার্ড বা বিমল গুরুংয়ের দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা শুধু নয়, জিএনএলএফ থেকে সিপিআরএম সব দলকে তাঁরা পাশে চাইছেন। অতীতেও কংগ্রেসের পাশে, পাহাড়ের আঞ্চলিক দল থেকেছে।
দলীয় সূত্রের খবর, বিনয় কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর থেকে কংগ্রেস তাঁকে পাহাড়ের দায়িত্ব দিয়েছে। পাহাড়ে একেবারে ঝিমিয়ে পড়া কংগ্রেসের সংগঠন বিনয় নতুন করে তৈরির চেষ্টায় নেমেছেন। ২২ ডিসেম্বর দার্জিলিং এবং রবিবার কালিম্পং কংগ্রেস দুই জেলার দলীয় অফিসে বৈঠক ডেকে পুরানো নেতা-কর্মীদের জড়ো করেছেন। তেমনই নিজের পরিচিত লোকজনের মাধ্যমে কর্মীদের নতুন করে রাস্তায় নামানোর চেষ্টা করছেন। বিনয়ের বক্তব্য, পাহাড়ে যা হয়েছে, তার সবই কেন্দ্রে কংগ্রেসের সরকার থাকার সময়ই হয়েছে। সুবাস ঘিসিংকে পাবর্ত্য পরিষদ কংগ্রেস সরকার দিয়েছিল। কংগ্রেসের সরকার থাকার সময়েই ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) তৈরি হয়েছে। নেপালি ভাষার স্বীকৃতি কংগ্রেস আমলেই হয়েছে। তাই আগামীতে কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় এলে। পাহাড়ের দাবিদাওয়া পূরণের যুক্তি নিয়ে বিনয় কংগ্রেসের হয়ে পাহাড়ে প্রচারে নেমেছেন।
কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ দাওয়া নরবুলার বয়স হয়েছে। সে জায়গায় কংগ্রেস নেতৃত্ব ‘গোর্খা মুখ’ হিসাবে পাহাড়ে দায়িত্ব দিয়েছেন বিয়কে। বিনয় বলেন, ‘‘কংগ্রেসের আমলেই পাহাড় মজবুত হয়েছে। আগামীতে হবে। গোর্খা সন্তানই যাতে লোকসভায় প্রার্থী হন, সে চেষ্টাও আমরা করব। সেখানে পাহাড়ের সব দলগুলির সমর্থন কংগ্রেস চাইছে।’’ যদিও কংগ্রেসের নতুন এই রণনীতি নিয়ে কোনও দলের তরফে এখনই কোনও মন্তব্য করা হয়নি।