শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্যালয়। ছবি সংগৃহীত।
শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) নতুন চেয়ারম্যান ঘোষণার বিজ্ঞপ্তি নিয়ে তৈরি হল ধোঁয়াশা। শুক্রবার সকালে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফে নতুন চেয়ারম্যান এবং বোর্ডের নির্দেশিকা জারি করা হয়। দ্বিতীয় বারের জন্য শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবকে এসজেডিএ-র দায়িত্ব দেওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নির্দেশিকা বদল করে আগের বোর্ড বহাল থাকছে বলে বিজ্ঞপ্তি বেরোয়। তা অনুযায়ী, এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান থাকছেন সৌরভ চক্রবর্তীই।
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের একাংশ অসন্তুষ্ট। তাদের বক্তব্য, সৌরভ দায়িত্বে থাকতেই পারেন। কিন্তু মেয়রকে পদ দিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মত বদল অসম্মানের সমতুল। মেয়র বলেন, ‘‘কলকাতা থেকে ফোন পেয়েছিলাম, আমায় চেয়ারম্যান করা হয়েছে। পরে শুনলাম, তা বাতিল হয়েছে। এ নিয়ে আর কিছু বলার নেই।’’ সৌরভ বলেছেন, ‘‘সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছু বলতে চাই না। দায়িত্ব পালন করে যাব।’’
দলীয় সূত্রের খবর, আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই দলের অন্দরে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। সৌরভকে জেলা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতি থেকেও সরানো হয়। দলের অন্দরে ‘কোন্দল’ নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বও ওয়াকিবহাল। তার উপরে, পঞ্চায়েত ভোটের আগে, এসজেডিএ-র কাজকর্মের পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, রাজ্য প্রশাসনের একটি শীর্ষ স্তর থেকে সৌরভকে সরানো হয়। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে প্রভাব পড়তে পারে বলে দলের আর এক শীর্ষনেতার কাছে বার্তা যায়। তিনি উপর মহলে কথা বলে নির্দেশিকায় বদল করান।
দলের কিছু নেতা মনে করছেন, শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়ির নেতাদের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করা হল। তাঁদের বক্তব্য— গৌতম দেবকে দু’টি জেলার পর্যবেক্ষক করেছেন তৃণমূল নেত্রী। পাঁচ দশকেরও বেশি গৌতম রাজনীতিতে। দলের নীতির বাইরে গিয়ে কথা বলেন না এবং নিজে এসজেডিএ চেয়ারম্যান হতে যাননি। তাঁকে নিয়ে এমন ‘ধোঁয়াশা’ হওয়ার দরকার ছিল না। অন্য দিকে, সৌরভের অনুগামীরা মনে করছেন, এই পরিবর্তনে আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ির একাংশে ভুল বার্তা যেত।
এ দিন সকালে গৌতম দেব এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান হয়েছেন শুনে অনেকেই তাঁকে শুভেচ্ছা জানান। পুরসভার বোর্ড মিটিংয়েও তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে একটি ফোন পেয়ে মেয়র সভাকক্ষের বাইরে যাওয়ার পরেই পরিস্থিতির বদল হয়। তিনি চেয়ারম্যান হচ্ছেন না বলে মেয়রই জানান।