ফাইল চিত্র
পাহাড় সমস্যা নিয়ে ফের টানাপড়েন শুরু হল বিমল গুরুংপন্থী মোর্চার সঙ্গে বিনয় তামাংপন্থী মোর্চার। বিমলপন্থী দুই মোর্চা নেতা গত মঙ্গলবার দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের দাবি, পাহাড় সমস্যা, ১১ জনজাতির তফসিলির মর্যাদা নিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে কেন্দ্র, রাজ্য এবং মোর্চা নেতৃত্বকে নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের জানিয়েছেন। বুধবার গুরুংপন্থী মোর্চা নেতারা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তা প্রচার করেছেন।
যা দেখে মোর্চা সভাপতি বিনয় তামাংদের কটাক্ষ, ২০১৭ থেকে বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডেকেই চলছে। আজ অবধি তা হয়নি। তেমনই, ১১টি জনজাতির তফসিলি ঘোষণার দাবিও ঝুলে রয়েছে। বিধানসভা ভোটের কথা ভেবে বিমল ও বিজেপি পাহাড়ে মিথ্যা প্রচার শুরু করেছে। বিনয় জানান, বিজেপি ১১টি জনজাতির তফসিলির স্বীকৃতি নিয়ে আন্তরিক হলে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের জন্য বসে থাকত না। সংসদে বিল পাশ করে তা কার্যকরী করা যায়। রাজ্য সরকারের সম্মতির পরেও গত দু’বছরে তা করেনি কেন্দ্রীয় সরকার।
নিজেকে বিমলপন্থী মোর্চার সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে দাবি করে নিমা তামাং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাসের কথা প্রচার করছেন। দিল্লি থেকে তিনি জানিয়েছেন, তিনি এবং বিনু সুনদাস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তাঁদের দাবি, পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে সবপক্ষকে চিঠি দেওয়া হবে। দাবি, প্রথম বৈঠকে অমিত শাহ নিজে থাকতে পারেন বলে জানিয়েছেন।
২০১৭ এর পরে পুলিশ খুন, বিস্ফোরণ, দেশদ্রোহিতার মতো বহু মামলায় অভিযুক্ত হয়ে বিমল গুরুং পাহাড় ছাড়েন, পাহাড় ছাড়েন রোশন গিরি। তার পরপর বিমলপন্থীদের দল থেকে বহিস্কার, সাসপেন্ড করে দলীয় সভাপতি হয়েছেন বিনয়। এরসঙ্গেই প্রথমে বিনয়, পরে অনীত জিটিএ চেয়ারম্যান হয়েছেন।
দীর্ঘদিন আত্মগোপন করার পরে ২০১৮ সালে দিল্লিতে প্রকাশ্যে আসেন বিমল গুরুং। বিজেপি নেতাদের সঙ্গে তাঁর ছবি ভাইরাল হয়। বিমল দিল্লিতে নিজের মতো কমিটি তৈরি করে পাহাড়ে বিপি বজগাইকে দলের দায়িত্ব দেন। একাধিক বিষয় নিয়ে বিমলের অডিয়ো, ভিডিয়ো বার্তা পাহাড়ে আসতেই থাকে।
বিনয়ের ঘনিষ্ট কয়েকজন নেতারা দাবি, মোর্চার সম্পাদক বা বিভিন্ন পদের কথা বলে যাঁরা সামনে আসছেন পাহাড়ের মানুষ তাঁদের ভাল করে চেনেনই না। অনেকে রাজ্যের বাইরে থেকে বসে বিবৃতি এবং মিথ্যা প্রচার করে চলেছেন বলে দাবি। এই অবস্থায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হলেও কেন্দ্র বা রাজ্যের বাইরে বিনয়পন্থী বা বিমলপন্থীদের বৈঠকে ডাকা হবে তা নিয়েই পাহাড়ে চুলচেরা আলোচনা শুরু হয়েছে।