তৃণমূল কাউন্সিলরদের মধ্যে বচসা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে কে নেতৃত্ব দেবেন, তা নিয়ে প্রকাশ্যে হট্টগোলে জড়িয়ে পড়লেন তৃণমূল নেতাদের একাংশ। তৃণমূলের জেলা স্তরের কয়েকজন নেতার মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। মারপিটের উপক্রম হলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। সোমবার শিলিগুড়ি পুরসভায় এই ঘটনা ঘটে।
মেয়রের পদত্যাগের দাবি তুলে এ দিন বেলা সাড়ে ১১ টা নাগাদ বাঘা যতীন পার্ক থেকে মিছিল করে পুরসভায় যান বিরোধী দলনেতা নান্টু পাল-সহ অন্যান্য কাউন্সিলর এবং নেতা-কর্মীরা। ঠিক ছিল সেখানে এক জায়গা জড়ো হয়ে বক্তব্য রাখবেন তাঁরা। পরে মেয়রের কাছে যাবেন। একটি টোটোতে মাইক লাগিয়ে সেখানে যান যুব তৃণমূলের নেতা সঞ্জয় পাল। তিনি মাইকে ঘোষণা করেন কৃষ্ণ পাল বক্তব্য রাখবেন। তা নিয়ে আপত্তি তোলেন দলের যুব সভাপতি বিকাশ সরকার। তিনি জানান, বক্তব্য রাখবেন বিরোধী দলনেতা। টোটোতে রাখা মাইক থেকে বক্তব্য রাখার ব্যাপারেও আপত্তি তোলেন তিনি। তা নিয়েই বচসা বাঁধে। শুরু হয় হাতাহাতি। কৃষ্ণবাবু, নান্টুবাবুরা সামলাতে গেলে তাঁরাও ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন। শেষে শিলিগুড়ি থানার আইসি গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন।
বিকাশবাবু বা সঞ্জয়বাবু এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। সঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘বিকাশবাবু যুব দলের নেতা। তাঁর সঙ্গে কোনও গোলমাল হয়নি।’’ বিরোধী দলনেতা নান্টু পালের কথায়, ‘‘টোটোতে লাগানো মাইকে নয়, ঠিক ছিল পুরসভা চত্বরে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখা হবে। সে কথাই বলা হয়েছিল।’’ আর কৃষ্ণবাবুর দাবি, কোনও গোলমাল হয়নি।
গোলমাল মেটার পরে মেয়রের পদত্যাগের স্লোগান তুলে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান তাঁরা। সে সময় মেয়রের ঘরে বামেদের কাউন্সিলররা এবং মেয়র পারিষদরা বসেছিলেন বলে তৃণমূলের প্রতিনিধিরা যাননি। বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘আগাম জানিয়ে শহরের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ওঁর সঙ্গে কথা বলতে এ দিন সাড়ে ১২ টায় সময় নিয়েছিলাম। পরিষদীয় দলের কাউন্সিলরদের নিয়ে কথা বলতে গেলে মেয়র সৌজন্য দেখাননি। ওঁর উচিত ছিল বেরিয়ে এসে আমাদের সঙ্গে কথা বলা। তা না করে দলবাজি করে গেলেন। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা না চাইলে আর কখনও তাঁর ঘরে যাব না।’’
মেয়র জানান, ওঁদের জন্যই তিনি অপেক্ষা করছিলেন। মেয়র বলেন, ‘‘প্রথমে পুলিশ পাঠিয়ে বলা হয়, কাউন্সিলররা যেন না থাকেন। সেই মতো তাঁরা চলে যান। পরে জানান মেয়র পারিষদরাও যেন না থাকেন। তা কেন হবে। ওঁরা বিভিন্ন সমস্যা জানতে চান। জল, জঞ্জাল, স্বাস্থ্য, বিভিন্ন বিভাগের মেয়র পারিষদরা তাই ছিলেন। এটাই নিয়ম। ওঁরা অবশ্য আমার পদত্যাগ চাইছিলেন। সেটা সম্ভব না, তা আগেই বলেছি।’’