ছবি : সংগৃহীত
মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভায় তৃণমূলের কাউন্সিলরদের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই ডামাডোল চলছে। ধস্তাধস্তি থেকে শুরু করে একে অন্যের বিরুদ্ধে তোপ দাগা— সবই। দলীয় দ্বন্দ্বে পুরপ্রধান বদল হওয়ার পরে তিন বছর এখনও কাটেনি। এরই মধ্যে বুধবার পুরসভার দলীয় পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন তৃণমূল কাউন্সিলররা। এ নিয়েই এখন তপ্ত জেলার রাজনীতি। এ বারের লোকসভা ভোটে শহরের ২৯টি ওয়ার্ডেই তৃণমূলের থেকে প্রচুর ভোটে লিড পেয়েছে বিজেপি। যা শাসকদলের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। আগামী বছরই এখানে পুরভোট। এই পরিস্থিতিতে কাল শুক্রবার, ৩০ তারিখ ইংরেজবাজার পুরসভার দলীয় সমস্ত কাউন্সিলরকে বৈঠকে ডাকলেন তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী মৌসম নুর। সে দিন দলের জেলা কার্যালয়ে নুর ম্যানশনে সেই বৈঠক হবে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৈঠকে দলীয় ২৫ জন কাউন্সিলরের পাশাপাশি গত পুরভোটে পরাজিত দলীয় প্রার্থীদেরও ডাকা হয়েছে। সে দিন দিনভর তিনটি ধাপে ওই বৈঠক হবে।
২০১৫ সালে ইংরেজবাজার পুরসভায় ২৯টি আসনের মধ্যে তৃণমূল এককভাবে ১৫টি আসন পায়। এ ছাড়া সিপিএম ৬, বিজেপি ৩, কংগ্রেস ২, নির্দল ২, আরএসপির একজন জয়ী হন। পুরপ্রধান হন কৃষ্ণেন্দু। পরে সিপিএম, নির্দল, বিজেপি, আরএসপি ও কংগ্রেস মিলিয়ে ১০ কাউন্সিলর তৃণমূলে নাম লেখান। ২০১৬ সালের নভেম্বরে কৃষ্ণেন্দুকে সরিয়ে পুরপ্রধান করা হয় নির্দল থেকে আসা নীহারকে। কিন্তু দলের অন্দরে দ্বন্দ্ব এখন এতটাই যে, বুধবার নীহারের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন দলেরই ১৫ জন কাউন্সিলর। বেশ কিছু দিন আগে পুরভবনেই নীহার-কৃষ্ণেন্দুর মধ্যে তুমুল বাকবিতণ্ডাও হয়। পুরপ্রধানের কাজকর্ম নিয়ে সরব হন দলের একাংশ কাউন্সিলর। যেখানে ঘাড়ের উপরে বিজেপি নিঃশ্বাস ফেলছে, সেই সময়ে দলের এই দ্বন্দ্ব নিঃসন্দেহে অস্বস্তিতে ফেলেছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে শুক্রবার বৈঠকে ডেকেছেন মৌসুম। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সে দিন মৌসম প্রত্যেক দলীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলবেন। বেলা ১১টায় ১২ জন কাউন্সিলর ও বিকেল তিনটেয় বাকি ১৩ জনের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। পুরভোটে দলের যাঁরা হেরেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে বৈঠক সন্ধ্যে ছ’টায়। সূত্রের খবর, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরোন কর্মীদের দলে ফিরিয়ে আনতে যে বার্তা দিয়েছেন, তাকে মান্যতা দিয়েই হেরে যাওয়া প্রার্থীদের সভায় ডাকা হয়েছে। মৌসুম অবশ্য বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতি ও দিদিকে বলো কর্মসূচি শহরে কার্যকর করা নিয়ে শুক্রবার ২৫ জন কাউন্সিলরকেই বৈঠক ডাকা হয়েছে।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘নীহারবাবুর বিরুদ্ধে অনাস্থার খবর শুনলাম। শুক্রবার সকলের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’ দলের একটি সূত্রে দাবি, মৌসমকে সামনে রেখে পুরসভায় প্রশাসক বসতে পারে।