ত্রয়ী: পার্কে সেই তিন বাঘ-শাবক।
চলতি প্রবাদে আছে, ‘মাঘের শীত বাঘের গায়ে’। মানুষ তো বটেই, গত কয়েকদিনের ঠান্ডায় সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে সেই বাঘেরাও!
মাঘের শুরুতে শীতের কামড়ে কাবু বেঙ্গল সাফারির বাঘেরাও। কম্বল, হিটার, হট এয়ার ব্লোয়ার কোনও কিছুই বাদ রাখা হয়নি তাদের জন্য। তবে এই শীতেও কিন্তু খুদে রয়্যাল বেঙ্গলদের দুষ্টুমিতে নাজেহাল বনকর্মীরা। সদ্য নিয়ে আসা নতুন কম্বল ছিঁড়ে কুটিকুটি করে দিয়েছে এক নিমেষে। খড়ও দেওয়া হয়েছিল শীতে আরামের জন্য। দুষ্টুমির ছলে সেই খড়ও তারা খেয়ে সাবাড় করে দিচ্ছে। অগত্যা মাঝেমধ্যে হিটার ও ব্লোয়ার চালিয়ে উষ্ণ রাখা হচ্ছে বাঘছানাদের। পার্কের অন্য বন্যপ্রাণীদেরও ঠান্ডা থেকে বাঁচাতে বিশেষ নজরে রাখা হয়েছে।
গত সপ্তাহ থেকে শিলিগুড়ি-সহ পাহাড় জুড়ে তাপমাত্রা অনেকটাই কমেছে। কোনও কোনও দিন ঘন কুয়াশাও থাকছে দিনভর। এই পরিস্থিতিতে অন্যবারের মতো এ বছরও বেঙ্গল সাফারিতে বন্যপ্রাণীদের জন্য হিটারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কয়েকমাস আগে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার শীলা ৩টি শাবকের জন্ম দেয়। সেই তিন নতুন সদস্যের জন্য আরও সতর্ক সাফারি কর্তৃপক্ষ। ঠান্ডা হাওয়া থেকে ওদের রক্ষা করতে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওদের দুষ্টুমির জেরে মুশকিলেই পড়েছেন বনকর্তারা। বেঙ্গল সাফারি পার্কের অধিকর্তা বাদল দেবনাথের কথায়, “কিছুদিন আগে রয়্যাল বেঙ্গল শাবকদের জন্য কম্বল দেওয়া হয়েছিল। ওরা তা ছিঁড়ে কুটিকুটি করে ফেলে। পরে খড়ও দিয়েছিলাম আমরা। একদিন দেখি মাংসের সঙ্গে সেই খড়ও খেয়ে নিচ্ছে শাবকেরা। গরম রাখার জন্য আপাতত মাঝেমধ্যে হিটার ও হট এয়ার ব্লোয়ার চালানো হচ্ছে। প্লাইবোর্ড দিয়ে ঘর আগেই বানানো হয়েছে।’’
কিন্তু বেশি হিটার চালালে পরে অভ্যাস হয়ে যেতে পারে। সেই আশঙ্কায় সেটা বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে না। তবে রয়্যাল বেঙ্গল শাবকদের পাশাপাশি অন্য পশুদের যাতে ঠান্ডায় কষ্ট না হয়, তা নজরে রাখা হচ্ছে বলে বেঙ্গল সাফারি সূত্রে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, ডিসেম্বর থেকে বেঙ্গল সাফারিতে দর্শক সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। করোনার কারণে সাফারি গাড়িগুলিতে স্বাভাবিকের তুলনায় কম যাত্রী ওঠানো হচ্ছে এখন। ফলে প্রতিদিন প্রচুর মানুষ সাফারির সুযোগ পাচ্ছেন না। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে সাফারি পার্কের তরফে বন দফতরের আধিকারিকদের জানানো হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে বাসগুলিতে আগের মতো দর্শকদের ওঠানোর ছাড়পত্র মিলতে পারে বলে বাদল দেবনাথ জানিয়েছেন। করোনার পর থেকে বন্ধ হাতি সাফারিও। শীঘ্রই সেই হাতি সাফারি চালু করারও সম্ভাবনা রয়েছে। নিজস্ব চিত্র