প্রতীকী ছবি।
এক দিনে নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে রাজ্যে শীর্ষে মালদহ। সোমবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে সেই তথ্য-ই উঠে এসেছে। তাতে চিন্তিত জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
এমন পরিস্থিতিতেও রবিবার থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভাইরোলজি ল্যাবে লালারসের নমুনা পরীক্ষা একলাফে অনেকটাই কমে গিয়েছে। অভিযোগ, বাড়ছে ‘ব্যাকলগ’-এর সংখ্যা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই ল্যাবে ব্যাকলগের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়িয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, আগে ওই ল্যাবে প্রতি দিন ৬০০-র বেশি লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছিল। সেখানে রবিবার রাত ৯টা পর্যন্ত হয়েছে ৩৩০টি। সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত ৫৫টি। যদিও মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, পরীক্ষায় প্রয়োজনীয় বিশেষ একটি রাসায়নিক শেষ হয়ে যাওয়ায় এই অবস্থা। বেলেঘাটার নাইসেড থেকে তা পাঠানোর কথা। সোমবার গভীর রাতে তা মালদহে এসে পৌঁছয়।
শনিবার মালদহ জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছুঁয়েছিল। ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে রবিবার নতুন করে আরও ২৩ জনের লালারসের পরীক্ষার রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসে। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, রাজ্যে ২৪ ঘন্টায় আক্রান্তের মাপকাঠিতে কলকাতাকে পিছনে ফেলে শীর্ষে মালদহ।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এই জেলায় আক্রান্তের সংখ্যাবৃদ্ধির একটা বড় কারণ পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরা। জেলায় যে ১২৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন, তার মধ্যে এক জন বাদে ১২২ জনই ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিক। বাস-ট্রাকের পাশাপাশি ট্রেনেও প্রতি দিন কয়েকশো পরিযায়ী শ্রমিক জেলায় ফিরছেন।
জেলার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিকদের লালারসের নমুনা যেন পরীক্ষা করা হয়। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, এখন শুধু মহারাষ্ট্র, দিল্লি এবং গুজরাত থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের লালারসের নমুনা নেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া রাজ্য থেকে ফেরা কোনও শ্রমিকের করোনার উপসর্গ থাকলে, তবেই তাঁর লালারস সংগ্রহ করা হবে।
অন্য দিকে, সোমবার রাতে ইসলামপুর মহকুমায় ৬ জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসে। তাঁদের মধ্যে চোপড়ার গোয়াবাড়ির এক জন। ১১ মে কলকাতা থেকে ফিরেছিলেন। ১৫ মে কলকাতা থেকে সাইকেলে ফেরা ইসলামপুরের উত্তর মাটিকুণ্ডার দু’জন ও ডাঙ্গাপাড়ার এক জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, তাঁদের ও পরিবারের সদস্যদের পাঞ্জিপাড়া সারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা থেকে ১২ মে বাড়ি ফেরেন ধরমপুরের এক বাসিন্দা। তাঁরও করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে সোমবার রাতে। করোনা আক্রান্তের খবর পেয়ে আতঙ্কে বাসিন্দারা ধরমপুর বাজারে বাঁশের ব্যারিকেড দেয়। রায়গঞ্জের বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের কুমরোল এলাকার বাসিন্দা আরও এক ব্যক্তির করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে।