—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
নজর রাখছে বিএসএফ। খোঁজখবর রাখছে পুলিশও। তবুও আতঙ্কে ঘুম নেই ওঁদের। ফের যদি চুরি হয় ফসল? ফের যদি রাতের অন্ধকারে পাম্পসেট পুড়িয়ে দেয় বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা? কোচবিহারের দিনহাটার বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা নাজিরহাটে এমনই আতঙ্কে দিন কাটছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। সোমবার বিষয়টি নিয়ে বিএসএফকে বিঁধেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ। জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মিনার সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি।
মঙ্গলবার ছোট গারোলঝোড়ার বাসিন্দা সোরাব আলি বলেন, ‘‘রাতের অন্ধকারে বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা আমার পাম্প সেট নিয়ে গিয়েছে। এ ছাড়াও এলাকার আর এক বাসিন্দা জিলা হোসেন শেখের জমির পাম্প সেট নিয়ে গিয়েছে। প্রশাসনের বৈঠকের পরে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে। কিন্তু একটা আতঙ্কের পরিবেশের মধ্যে আমরা রয়েছি। আবার কখন হামলা হয় কে জানে।’’ আর এক বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেনের অভিযোগ, ‘‘বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা আমার সাত বস্তা আলু চুরি করে নিয়ে গিয়েছে। যে ভাবে বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা ভারতীয় সীমান্তে ঢুকে নানা ভাবে আক্রমণ করছে, তাতে আতঙ্কেই আছি।’’
দিনহাটার বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা নাজিরহাট। ওই এলাকার কিছু অংশে কাঁটাতার রয়েছে, কিছু অংশে নেই। সেই সুযোগ নিয়েই বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা ভারতীয়দের ফসল ও জিনিসপত্র লুঠের চেষ্টা করে। পাচারও হয়। এর আগেও কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ-সহ একাধিক সীমান্তে এমন ঘটনা ঘটেছে। বিএসএফের নজরদারির পরেও কী ভাবে বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা ঢুকে পড়ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
তৃণমূলের স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য নবীরউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘‘গত কয়েক দিন ধরেই ফের তাণ্ডব শুরু করেছে বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী সামাজিক মাধ্যমে বিএসএফের বিরুদ্ধে সরব হতেই প্রশাসনের আধিকারিকেরা নোটাফেলা সীমান্তে বৈঠক করেন। সোমবার রাতে সে ভাবে আর কিছু হয়নি। তবে একটা আতঙ্কের পরিবেশ রয়েছে। না জানি কখন দুষ্কৃতীরা আবার হামলা করে।’’ দিনহাটা মহকুমার পুলিশ আধিকারিক ধীমান মিত্র বলেন, ‘‘বাংলাদেশি সীমান্তরক্ষী বাহিনী আশ্বাস দিয়েছে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে তারা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আশা করছি, নতুন করে আর কিছু হবে না।’’ সীমান্তের বাসিন্দাদের কয়েক জন আবার বলেন, ‘‘বিএসএফকে দেখেও দুষ্কৃতীরা ভয় পায় না। কখনও-কখনও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। স্বাভাবিক ভাবেই আমরা আতঙ্কে রয়েছি।’’ বিএসএফের তরফে জানানো হয়েছে, ওই ঘটনার পরে সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তাই আতঙ্কের কোনও বিষয় নেই।