—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সব ঠিক থাকলে ইদের পরেই সংসদে আসতে চলেছে ওয়াকফ বিল। দেশের মুসলিম সমাজের বড় অংশ ইতিমধ্যেই ওই বিলের প্রতিবাদে নেমে অস্বস্তি বাড়িয়েছে বিজেপি জোট সরকারের। এ বার খোদ নরেন্দ্র মোদী সরকারের অন্যতম বড় শরিক টিডিপি নেতা তথা অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু মুসলিমদের পাশে দাঁড়িয়ে ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষার ডাক দিয়ে নতুন করে বিড়ম্বনায় ফেলে দিয়েছেন শাসক জোটের বড় বিজেপিকে।
ওই বিল পেশ হওয়ার সময়েই বিলের বিষয়বস্তু নিয়ে শরিক দলগুলির মধ্যে টিডিপি প্রশ্ন তুলেছিল। পরে যৌথ সংসদীয় কমিটিতে ওই বিল নিয়ে আলোচনায় অবশ্য সে ভাবে কোনও আপত্তি জানাননি টিডিপি নেতৃত্ব। রাজনীতিকদের একাংশ মনে করছেন, এখন কমিটি ঘুরে আসা সংশোধিত ওয়াকফ বিল যখন ফের সংসদে পেশ হতে চলেছে, তখন মুসলিমদের সম্পত্তি রক্ষার কথা বলে আসলে রাজ্যের সংখ্যালঘুদের পাশে থাকার বার্তা দিতে চাইছেন টিডিপি প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডু। গত কাল একটি ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে চন্দ্রবাবু বলেন, রাজ্যের ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষার প্রশ্নে তিনি দায়বদ্ধ। ওয়াকফ সম্পত্তির চরিত্র নষ্ট হয়, এমন কোনও কাজ তিনি করবেন না। পাশাপাশি রাজ্যের সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে তাঁর সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে, তার বিস্তারিত ফিরিস্তি তুলে ধরেন তিনি।
যে ভাবে শেষবেলায় ওয়াকফ প্রশ্নে চন্দ্রবাবুর দল কিছুটা হলেও ভিন্ন অবস্থান নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাতে স্বস্তির হাওয়া কংগ্রেস শিবিরে। নায়ডুর ওই অবস্থান পরিবর্তন গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন তৃণমূল নেতৃত্বও। কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, ওই বিল এনে ওয়াকফের চরিত্র পাল্টানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। দল আশা করছে দেরিতে হলেও তা বুঝতে পেরেছেন টিডিপি নেতৃত্ব। চন্দ্রবাবুর অবস্থান তাদের অস্বস্তিতে ফেললেও বিজেপির ব্যাখ্যা, টিডিপি এনডিএ-র জোট শরিক। সব শরিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেই ওই বিল আনা হয়েছে। তবে এনডিএ-র জোট শরিক হলেও দল হিসাবে টিডিপি-র নিজস্ব কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বিজেপি তা জানে। সেই বাধ্যবাধকতা থেকেই জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার ইফতারে যোগ দেন, চন্দ্রবাবু নায়ডু ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষার দাবিতে সরব হন। রাজ্য রাজনীতি তথা সংখ্যালঘু ভোট ধরে রাখার
স্বার্থে শরিকেরা নিজেদের রাজনীতি করলেও যতক্ষণ শরিক দলগুলি ওই বিলের সমর্থনে রয়েছেন, ততক্ষণ কোনও সমস্যা নেই বলে জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
এ দিকে ইদের আগে আজ ছিল শেষ শুক্রবার। আজ অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক মৌলানা মহম্মদ ফজলুর রহিম মুজাদ্দিদি সমস্ত মুসলিম ধর্মালম্বীকে জম্মুার নামজে ওয়াকফ বিলের প্রতিবাদে হাতে কালো রাবার ব্যান্ড পরে যাওয়ার আবেদন করেন। উত্তরপ্রদেশের সম্ভল লোকসভার এসপি সাংসদ জিয়াউর রহমা বর্ক জানান, ‘‘প্রতিবাদ জানানো প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার। আমি ব্যক্তিগত ভাবে কালো ব্যান্ড পরে প্রতিবাদ জানানোকে সমর্থন করছি।’’ অন্য দিকে মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ড আন্দোলনের নামে মুসলিম জনতাকে ভুল পথে চালনা করেছে বলে সরব হন বিজেপি সাংসদ তথা ওয়াকফ সংক্রান্ত যৌথ সংসদীয়
কমিটির চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পাল। তিনি বলেন, ‘‘এরা কি মসজিদে প্রার্থনা করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে চাইছে? ল’বোর্ড শ্রমিক সংগঠনের মতো কাজ করছে। মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। মনে রাখতে হবে সবেমাত্র রিপোর্ট জমা পড়েছে। এখনও ওই বিল সংসদের কোনও কক্ষে পেশ হয়নি। তার আগে প্রতিবাদের
কী মানে!’’