আটকে: থমকে রয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লকের পরিকাঠামো তৈরির কাজ। ছবি: স্বরূপ সরকার।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে উন্নত মানের চিকিৎসা পরিষেবা দিতে সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লক তৈরির প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য সুরক্ষা যোজনায় পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হলেও তা শেষ করতে টালবাহানা চলায় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হাসপাতালেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সাল থেকে কাজ শুরু করে দুই বছরের মধ্যে তা শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু শুরু থেকেই ওই কাজ নিয়ে টালবাহানা চলছে বলে অভিযোগ। প্রথমে যে ঠিকাদার সংস্থা বরাত পেয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল নিয়ম মাফিক কাজ না করার। পরে ওই ঠিকাদার সংস্থাকে কালো তালিকা ভুক্ত করা হয়। দীর্ঘ দেড় বছরের বেশি কাজ বন্ধ হয়ে পড়েছিল। পরে নতুন ঠিকাদার সংস্থা নিয়োগ করে এ বছর কাজ শুরু করা হলেও সে ভাবে অগ্রগতি হচ্ছে না বলে অভিযোগ। বিষয়টি নজরে এসেছে জনস্বাস্থ্য দফতরের উত্তরবঙ্গ ওএসডি সুশান্ত রায়ের। দ্রুতার সঙ্গে ওই কাজ শেষ করার বিষয়টি নিয়ে আজ, শনিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি জরুরি বৈঠক ডেকেছেন।
ওএসডি বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট সময়ের পরও কয়েক বছর পেরিয়ে গিয়েছে। কেন কাজ শেষ করা যাচ্ছে না, বুঝতে পারছি না। তাই বৈঠক ডেকেছি। প্রচুর টাকা খরচ করে ওই প্রকল্প হচ্ছে। তা শেষ হলে উত্তরবঙ্গের বাসিন্দারা উপকৃত হবেন।’’
হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুরুতে প্রকল্পের বরাদ্দ ছিল ১৫০ কোটি টাকা। নির্দিষ্ট সময় কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পের খরচ বেড়ে যায়। খরচ বাড়িয়ে দ্বিতীয় ঠিকাদার সংস্থাকে কাজের বরাত হয়েছে। ইতিমধ্যেই বহু মূল্যের বিভিন্ন অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিও আনা হয়েছে। ভবন নির্মাণের কাজ শেষ না হওয়ায় যে সব কার্যত ফেলে রাখতে হয়েছে। পড়ে থেকে সে সব নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। কর্তৃপক্ষের একাংশ জানান, ওই পরিকাঠামো গড়ে উঠলে সেখানে নিউরোলজি, কার্জিওলজি, নেফ্রলজির চিকিৎসা মিলবে। পেসমেকার বসানোর পরিকাঠামো, ক্যাথল্যাব সবই থাকবে। থাকবে অত্যাধুনিক বার্ন ইউনিট, প্লাস্টিক সার্জারির সুবিধা। কার্ডিয়ো থোরাসিক বিভাগের পরিকাঠামো থাকবে। বর্তমানে নিউরোলজি, কার্জিওলজির মতো চিকিৎসা পরিষেবা কার্যত সে ভাবে নেই উত্তরবঙ্গের কোনও সরকারি হাসপাতালে। রোগীরা নার্সিংহোমে যেতে বাধ্য হন। নিউরোলজি, কার্ডিওলজি এবং নেফ্রলজির বহির্বিভাগের পরিষেবা হাসপাতালে এক সময় চালু করা হলেও এখন তা কার্যত নেই। সুপার স্পেশ্যালিটি মানের চিকিৎসা পরিষেবা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে দ্রুত ওই প্রকল্পের কাজ শেষ করার দাবি উঠেছে।