দূষণ: রবীন্দ্রনগর মেন রোডে সোনার দোকানে চুরির পরে উদ্বিগ্ন দোকানমালিকের পরিবার। নিজস্ব চিত্র
পরপর শহর জুড়ে দুষ্কৃতী হানার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে। শনিবার দুপুরের শিলিগুড়ির বর্ধমান রোডের সোনা বন্ধক রাখার সংস্থায় লুট হয়েছে। এরপরে রবিবার সকালেও ভক্তিনগরের আশিঘর এলাকায় সোনার দোকানে চুরি হয়েছে। তার আগে শুক্রবার গভীর রাতে মাটিগাড়া থানা এলাকায় চারটি আলাদা লুটের ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ডাকাতি যেমন রয়েছে। তেমনই একটি এটিএম ভেঙে লুটের চেষ্টাও হয়েছে। মাটিগাড়ার তুম্বাজোতের বাসিন্দারা দুষ্কৃতীদের খুঁজে বার করা এবং নিরাপত্তার দাবিতে রবিবার থানায় স্মারকলিপিও দিয়েছেন। পরপর লুটের ঘটনায় পুলিশের নজরদারির অভাবকেই দায়ী করেছেন বাসিন্দারা।
তুম্বাজোতের বাসিন্দা মুন্না রায়ের বাড়ির সামনে কিছুটা অংশের নির্মাণ চলছে। পিছনের দিকে টিনের ঘরে তিনি স্ত্রী এবং দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে থাকেন। শুক্রবার জন্মাষ্টমীর পুজোর পরে রাত ১টা নাগাদ শুতে যান তাঁরা। রাত ২টা নাগাদ মুন্না গেটে আওয়াজ পান। তিনি বলেন, ‘‘৪-৫ জন দরজা খুলে ঢুকে পড়ে। একজন আমার মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ধরে। সবার মুখ ঢাকা ছিল। বাকিদের হাতে বড় বড় ধারাল অস্ত্র ছিল। আলমারির চাবি না দিলে প্রাণে মারার হুমকি দেয়। নগদ টাকা এবং সোনার গয়না মিলিয়ে লক্ষাধিক টাকা লুট হয়েছে। বর্ধমান রোডের সন্তোষীনগরে ওষুধের দোকান রয়েছে মুন্নার। তদন্তকারীরা জেনেছেন, দুষ্কৃতীরা বেরনোর সময় মুন্নার বাড়ির পাশের আরও তিনটি বাড়ির গেট বাইরে থেকে বন্ধ করে দেয়। সেসময় লাগোয়া পঞ্চনই সেতুতে একটি সন্দেহজনক পিকআপ ভ্যানের উপস্থিতি জানা গিয়েছে। এরপরেই তুম্বাজোত-শিশুডাঙি রোডের কয়েকশো মিটারের মধ্যে আরেকটি বাড়িতে হানা দেয় দুষ্কৃতী দল। ওই বাড়ির সদস্য পূজা কুমারী জানান, গেটের তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে নগদ টাকা এবং সোনা নিয়ে গিয়েছে।
একই রাতে আরও দু’টি এলাকায় হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। ৩১ জাতীয় সড়কের পাশে পরিবহণ নগরীর আইটি পার্কের পাশে একটি আর্য়ুবেদিক ওষুধের গুদামের শাটার ভেঙে চুরি হয়েছে। শেষে মাটিগাড়া বিডিও অফিস থেকে হালেরমাথায় যাওয়ার রাস্তায় একটি এটিএম ভেঙে টাকা লুটের চেষ্টা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
রবিবারও লুটের অভিযোগ এসেছে আশিঘর এলাকা থেকে। পুলিশ জানায়, ঘোঘোমালির বাসিন্দা উজ্জ্বল কর্মকারের তিলক সাধুর মোড়ে সোনার দোকান। রোজকার মতো তিনি দোকানের গেট খুলে ভিতরে একটি ভল্টের পিছনে গয়নার ব্যাগটি রাখেন। মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য গেট বন্ধ করে দোকানের পিছনে জল আনতে যান। তারমধ্যে দুই বাইক আরোহী দোকানে ঢুকে ব্যাগ নিয়ে চম্পট দেয় বলে অভিযোগ। আশিঘর ফাঁড়ির পুলিশ পাশের দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। নগদ টাকা ও সোনা মিলিয়ে লক্ষাধিক টাকার চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ।