র্যাগিংয়ে অভিযোগ ওঠায় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ ছাত্রকে সতর্ক করেছেন কর্তৃপক্ষ। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে প্রথম শিক্ষাবর্ষে নতুন ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস শুরু হবে। তাঁরা হস্টেলেও থাকতে শুরু করবেন। শুরুতেই র্যাগিং নিয়ে অভিযোগ ওঠায় উদ্বিগ্ন কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুসারে হস্টেলে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের আলাদা থাকার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। সেই মতো রামকৃষ্ণ হস্টেল প্রথম বর্ষের ছাত্রদের জন্য বরাদ্দ করার কথা। আজ, মঙ্গলবারের আগেই ওই হস্টেল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিনিয়র ছাত্রদের। তাদের বিবেকানন্দ হস্টেলে জিনিসপত্র সরাতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে হস্টেলে তাদের খাবার বন্ধ বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গত ২৩ অগস্ট র্যাগিংয়ের ঘটনার সময় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের দায়িত্বে ছিলেন স্বপন রক্ষিত। গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে সেই দায়িত্ব পেয়েছেন অনির্বাণ মিশ্র। বর্তমানে ডেপুটি রেজিস্ট্রার স্বপনবাবু বলেন, ‘‘ওই ছাত্রদের সতর্ক করা হয়েছে। তাঁরা লিখিত দিয়েছেন, এ ধরনের কোনও ঘটনায় যুক্ত নন, ভবিষ্যতেও থাকবেন না।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার পর হস্টেলের কর্মীদের একাংশই বিষয়টি অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াডের সদস্যদের জানিয়েছিলেন। অভিযোগকারী ছাত্রটি এসএমএস করে অভিযোগও জানিয়েছেন। অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি দুই দফায় বৈঠকও করে। অভিযোগকারী ছাত্রটি অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিও জানিয়েছিলেন এসএমএস-এ। অথচ এসএমএস-এ ওই অভিযোগটিকে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি যথাযথ গুরুত্ব দিতে চাইছে না বলে অভিযোগ।
বৈঠকে কমিটির সদস্যদের জানানো হয়, অভিযুক্ত ও অভিযোগকারীর লিখিত বয়ান নিতে। অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলে বয়ান নেওয়া হলেও অভিযোগকারী ছাত্রটির বয়ান এখনও নিতে পারেননি তাঁরা। কর্তৃপক্ষের গড়িমসির মনোভাবে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা নিয়েও অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফেও অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির বৈঠকে বিষয়টি রর্যাগিংয়ের ঘটনা নয় বলে দাবি করে চাপ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। টিএমসিপি অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে। অথচ কর্মীদের কাছ থেকে ঘটনা শোনার পর অ্যান্টিরর্যাগিং স্কোয়াডের সদস্যদের একাংশ তৎপর হয়ে অভিযোগকারী ছাত্রটির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এখন তাঁরাই বিষয়টি নিয়ে গড়িমসি করছেন বলে অভিযোগ।
এ দিন প্রথম বর্ষের ছাত্রদের অনেকেই এসেছিলেন হস্টেলে কবে থেকে তাঁরা থাকতে পারবেন তা খোঁজ করতে। র্যাগিংয়ের অভিয়োগ শুনে তাদের অনেকেই উদ্বিগ্ন। কর্তৃপক্ষ অবশ্য আশ্বস্ত করছেন র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস জুড়েই প্রচার রয়েছে। এর বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ সতর্ক রয়েছে। রামকৃষ্ণ হস্টেলের সুপার জয়দীপ সেন জানিয়েছেন, প্রথম বর্ষের ছাত্রদের হস্টেলে থাকার বিষয়ে শীঘ্রই তালিকা টাঙানো হবে।