হাতেনাতে: পথে বেরোতে দেখে করোনা পরীক্ষা। নিজস্ব চিত্র
কোথাও লকডাউন ভেঙে রাস্তায় বের হওয়া লোকেদের করানো হল করোনা পরীক্ষা, কোথাও হল ধরপাকড়। কোথাও আবার নিশ্চুপ পুলিশ। চলতি মাসের প্রথম লকডাউনে ভিন্ন ভিন্ন ছবি ধরা পড়ল মালদহ ও দুই দিনাজপুর জেলায়।
মালদহ
শুনশান রাস্তায় ব্যাগ হাতে হন্তদন্ত হয়ে বাজারে যাচ্ছেন চল্লিশার্ধ এক ব্যাক্তি। লকডাউনে কোথায় যাচ্ছেন? উর্দিধারীর প্রশ্নের জবাবে তাঁর উত্তর, লকডাউনের কথা ভুলে গিয়েছিলাম। অস্থায়ী ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে তাঁর করোনা পরীক্ষা করান পুলিশকর্মীরা। সোমবার ফের লকডাউন ভঙ্গকারীদের অ্যান্টিজেন কিটে করোনা পরীক্ষা করা হয় কালিয়াচকে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এ দিন চার শতাধিক করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রত্যেকেরই রিপোর্ট নেগেটিভ বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতরের। কালিয়াচকের মতো চাঁচল মহকুমায় রাস্তায় চলে ধরপাকড়। এ দিন লকডাউন ভাঙায় চাঁচল মহকুমায় ৭২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ, পুলিশের তৎপরতা দেখা যায়নি ইংরেজবাজার শহরে। দোকান-বাজার বন্ধ থাকলেও রাস্তায় মোটরবাইক, টোটো, ই-রিকশা চলাচল করতে দেখা গিয়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুর
গার্ডরেল থাকলেও নেই পুলিশ। তবুও রাস্তাঘাট শুনশান। পুলিশি তৎপরতায় নয়, বৃষ্টির দাপটে চলতি মাসের প্রথম লকডাউনে দুপুর পর্যন্ত ঘরবন্দি থাকলেন দক্ষিণ দিনাজপুর বাসী। পুলিশের এক কর্তা বলেন, আমাদের হয়ে ম্যাচ জেতাল কার্যত বৃষ্টিই। তবে দুপুরের পর থেকে বদলাতে শুরু করে শুনশান রাস্তার ছবি। বালুরঘাট শহরের সাধনা মোড় এলাকায় সাইকেলে ড্রাম বেঁধে হাজির দুধ বিক্রেতারা। হাতে কেটলি, প্লাস্টিকের বোতল নিয়ে ভিড় জমান ক্রেতারাও। রাস্তায় কার্যত বসে যায় দুধের বাজার। উধাও হয়ে যায় সামাজিক দূরত্ববিধিও। অভিযোগ, দেখা মেলেনি পুলিশের। দুজন সিভিককর্মী থাকলেও টিপটিপে বৃষ্টিতে দোকানের শেডের নীচেই বসে থাকেন। বৃষ্টি যেমন পুলিশের কাজ হালকা করেছে, তেমনই গরমও কিছুটা কমেছে বলে দাবি বালুরঘাটবাসীর।
উত্তর দিনাজপুর
ঝাঁপ বন্ধ চায়ের দোকানের। বাইরে থেকে হাঁক দিতেই মিলছে চা। দোকানের মালিক সাটারের একাংশ তুলে নিচ দিয়ে ক্রেতার হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন চায়ের কাপ। কোথাও আবার দোকানের সাটারের একাংশ খোলা রেখে চা, পান, মুড়ি, ঘুগনি-সহ বিভিন্ন খাবার বিক্রি হয়েছে। লকডাউনে এমনই ছবি রায়গঞ্জের মোহনবাটী, নিউমার্কেট, সুভাষগঞ্জ, দেবীনগর, হাসপাতাল রোড, কর্ণজোড়া সহ কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইটাহার ও করণদিঘির এলাকায়। অভিযোগ, এ দিন দিনভর পুলিশের সামনেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় ছোটগাড়ি, মোটরবাইক, টোটোর মতো যানবাহন চলাচল করেছে। ইসলামপুরেও ছবিটা একই। শহরের বিভিন্ন বাজারে এদিন ব্যবসায়ীদের একাংশ প্রকাশ্যে আনারস বিক্রি করেছেন। পুলিশের অভিযান চলতেই আনারস ফেলে উধাও হয়ে যান বিক্রেতারা। রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সুমিত কুমারের অবশ্য দাবি, পুলিশের অভিযান ও নজরদারির জেরে এ দিন গোটা জেলায় লকডাউন সফল হয়েছে।
তথ্য সহায়তা: অভিজিৎ সাহা, অনুপরতন মোহান্ত, গৌর আচার্য, বাপি মজুমদার, অভিজিৎ পাল
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)