নিজস্ব চিত্র।
নাচে-গানে মেতে উঠে আলিপুরদুয়ার-সফর শেষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু হাসিমারার মঞ্চ থেকে নামার পথেই ছন্দপতন। প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রবীণ নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে দেখতে পেয়েই খেপে ওঠেন মমতা। নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ আধিকারিকদের সামনেই মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভের মুখে পড়েন রবীন্দ্রনাথ। সূত্রের খবর, কেএলও নিয়েই মমতার তোপে পড়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী।
গণবিবাহ এবং সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের অনুষ্ঠানে হাসিখুশি মেজাজেই ধরা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তাল কাটল অনুষ্ঠান শেষে। জানা যাচ্ছে, হাসিমারার সুভাষিণী চা বাগান মাঠের অনুষ্ঠান শেষ করে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তখনই দেখতে পান দাঁড়িয়ে রয়েছেন কোচবিহারের পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ। সেই সময়ই রবীন্দ্রনাথও কিছু একটা বলতে যান মুখ্যমন্ত্রীকে। মমতা তাঁকে থামিয়ে ধমক দিতে শুরু করেন। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথকে বলেন, যারা বন্দুক দেখিয়ে ভয় দেখাচ্ছে তাদের হয়ে তাঁবেদারি করা তিনি পছন্দ করছেন না। ভিডিয়োয় মুখ্যমন্ত্রীকে আঙুল উঁচিয়ে কিছু বলতে দেখা যায়। মনে করা হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথকে এ প্রসঙ্গে সাবধান করে দেন। রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, কেএলও সংক্রান্ত কিছু নিয়ে রবীন্দ্রনাথ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী আলিপুরদুয়ারে আসেন। তার ঠিক আগের দিন, রবিবার, একটি ভিডিয়ো বার্তা দেন ‘কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন (কেএলও)’ প্রধান জীবন সিংহ। সেখানে আলাদা রাজ্যের দাবির পাশাপাশি তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘জোর করে কিছু করতে এলে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হবে। রক্তের বন্যা বইয়ে দেব।’ মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ারের প্রকাশ্য জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী তার জবাব দেন। স্পষ্ট বলেন, ‘‘রক্ত দেওয়ার জন্য তৈরি। বাংলাকে ভাগ করতে দেব না।’’ সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘আমাকে ভয় দেখাচ্ছে ভাগ না করলে (উত্তরবঙ্গ) নাকি আমাকে মেরে ফেলবে। তোমার ক্ষমতা থাকলে আমার বুকে বন্দুক ঠেকাও। আমি অনেক বন্দুক দেখে এসেছি। আমাকে এ সব বন্দুক-টন্দুক দেখিয়ো না।’’
তৃণমূলের একটি অংশের দাবি, উত্তরবঙ্গকে ভাগ করার দাবিকে নতুন করে পাকিয়ে তোলার চেষ্টা করছে বিজেপি। জীবন সিংহের মতো ফেরার নেতারা তাতেই অক্সিজেন যোগাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী আলিপুরদুয়ারে দাঁড়িয়ে সেই নীতিকেই সপাটে প্রতি আক্রমণ করেছেন।