বিধান মার্কেটে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। —নিজস্ব চিত্র।
শিলিগুড়ির বিধান মার্কেটে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলিকে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার বিকালেই উত্তরকন্যা থেকে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ছ’টি দোকানের মালিককে এক লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি বিধান মার্কেটের বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকেও। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরই রবিবার সন্ধ্যায় বিধান মার্কেটে পৌঁছে যান অরূপ। সঙ্গে ছিলেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। বিধান মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন মন্ত্রী। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বোঝার চেষ্টা করেন।
শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ বিধান মার্কেটে আচমকা আগুন লেগেছিল। নিমেষে ছড়িয়ে পড়েছিল আগুন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় একাধিক দোকান। দমকল কর্মীদের সঙ্গে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগিয়েছিল সীমান্তরক্ষী বাহিনীও। পুজোর মুখে এই ভাবে আগুন লাগায় মাথায় হাত পড়েছিল বিধান মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলির ব্যবসায়ীদের। রবিবার সন্ধ্যায় উত্তরকন্যা থেকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ঘোষণার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানান ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলিও তৈরি করে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, “পুজোর সময় মানুষের রুজি রোজগারের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। সারা বছর ধরে তাঁরা জিনিসপত্র গুছিয়ে আনেন বিক্রি করার জন্য।” পাশাপাশি গজলডোবায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত চার জনের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। একটি পরিবারের সদস্যের হাতে ৫ লাখ টাকা এবং অপর পরিবারের সদস্যের হাতে ৩ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ তুলে দেন তিনি। এ ছাড়া ভুতনিতে নৌকাডুবিতে মৃত দু’জনের পরিবারকেও ২ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি।
রবিবার সন্ধ্যায় বিধান মার্কেটে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অরূপ জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই তিনি দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছেন। তিনি বলেন, “পুজোর মুখে এই ধরনের দুর্ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।” মুখ্যমন্ত্রী যে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলির জন্য ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছেন, বিধান মার্কেটে দাঁড়িয়ে ব্যবসায়ীদের আবারও সে কথা জানান অরূপ। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলিও শিলিগুড়ি পুরসভা থেকে তৈরি করে দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন অরূপ।
বিধান মার্কেট চত্বরে ব্যবসায়ীদের সমস্যার বিষয়টিও রবিবার তুলে ধরা হয় মন্ত্রীর কাছে। অরূপ ব্যবসায়ীদের জানান, যদি কারও কোনও সমস্যা থাকে সেই বিষয়টি নিয়ে তাঁকে চিঠি পাঠানোর জন্য। মন্ত্রীর আশ্বাস, চিঠি পেলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সেই সমস্যার কথা পৌঁছে দেবেন এবং সমাধানের চেষ্টা করবেন।
মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষতিপূরণ ঘোষণা এবং তার পর অরূপের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে খুশি ব্যবসায়ীরাও। বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বাপি সাহা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এই দুর্দিনে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এটি খুবই ভাল বিষয়। আর্থিক সাহায্যও ঘোষণা করেছেন। আমাদের মার্কেটের জমি জটের সমস্যা মেটাতেও মুখ্যমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করার জন্য অনুরোধ করছি।”