মালদহে আধার বাতিলের চিঠি প্পাপকের হাতে মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি তুলে দিচ্ছেন প্রশাসনের কর্তারা। নিজস্ব চিত্র।
আধার বাতিলের চিঠি প্রাপকের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে মালদহে। শুক্রবারেও নতুন করে বহু বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে আধার কার্ড বাতিলের চিঠি। আধার নিয়ে অস্বস্তিতে পড়া পরিবারগুলির হাতে মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি পৌঁছে দিচ্ছেন প্রশাসনের কর্তারা। তাঁদের দাবি, মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘আশ্বস্ত’ করে চিঠি দিয়েছেন। সে চিঠি সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলিকে দেওয়া হচ্ছে। তবে আধার কার্ড বাতিলের চিঠি দিনকে দিন বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন মালদহের সীমান্ত লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ।
আধার কার্ড বাতিল নিয়ে ব্লক প্রশাসনকে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। প্রশাসনের দাবি, ব্লকে-ব্লকে সহায়তা শিবির খোলা হয়েছে। আধার কার্ড বাতিলের চিঠি পৌঁছলে, পরিবারগুলিকে দ্রুত ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, “পুরাতন মালদহ, হবিবপুর, বামনগোলার মতো একাধিক ব্লকে বহু পরিবার আধার কার্ড বাতিলের চিঠি পেয়েছেন। পরিবারগুলি যাতে সরকারি কোনও সুবিধা থেকে কোনও ভাবেই বঞ্চিত না হয়, তা দেখা হচ্ছে। পরিবারগুলির সঙ্গে ব্লক প্রশাসনের তরফে নিয়মিতই যোগাযোগ করা হচ্ছে।”
প্রশাসনের দাবি, এ পর্যন্ত ২১ জনের আধার কার্ড বাতিলের চিঠি এসেছে। তাঁদের মধ্যে, বামনগোলা ব্লকের পাকুয়াহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের কামারগাঙা গ্রামের ১০ জন রয়েছেন। এ ছাড়া, কালিয়াচক, হবিবপুর, পুরাতন মালদহ, মানিকচক, ইংরেজবাজার ব্লকেরও একাধিক বাসিন্দার আধার কার্ড বাতিল হয়েছে। আধার কার্ড বাতিল নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে জেলায়। কারণ, জেলায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, দেশভাগের সময় বহু পরিবার কাঁটাতার টপকে এ পারের সীমান্ত-পারে বসবাস শুরু করেন। পুরাতন মালদহের মুচিয়ার বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব হারাধন সরকার বলেন, “দেশভাগের সময় পরিবারের সঙ্গে ও পার থেকে এ পারে চলে আসি। চল্লিশ বছর ধরে এ পারে বাস করছি। আধার কার্ড, ভোটার কার্ড তৈরি করেছি। এখন শুনছি, সবার আধার কার্ড বাতিল হয়ে যাচ্ছে। কী হবে জানি না!” বামনগোলার বাসিন্দা আরতি সূত্রধর বলেন, “আধার বাতিলের মতো মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস দেওয়া চিঠিও পেয়েছি। তবে আধার কার্ড এখনও চালু হয়নি। আমরা চাই, আমাদের আধার কার্ড ফের চালু হোক।”