বাঁ দিক থেকে নিধি লামা, সাই লামা, রিতা লামা এবং মনীশ মিঞ্জকে। —নিজস্ব চিত্র।
প্রত্যন্ত এলাকার চা বাগানে অভাবের সংসারে থেকেও স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি ওঁরা। স্বপ্ন আর মেহনত নিয়ে গিয়েছে লক্ষ্যে। মিলেছে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ। যে সাফল্যের জন্য শনিবার আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশের তরফে কালচিনি থানায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে তফসিলি জনজাতির চার প্রতিনিধি—সাই লামা, রিতা লামা, নিধি লামা এবং মনীশ মিঞ্জকে। কালচিনির বিভিন্ন চা বাগানের এই চার জনই এখন সর্ব ভারতীয় ‘নিট’ পরীক্ষার উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি কলেজে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছেন।
তবে রাস্তা মোটেই সহজ ছিল না বলে জানান মেচপাড়া চা বাগানের ৮ নম্বর লাইনের বাসিন্দা ছাত্রী সাই লামা। তাঁর কথায়, “স্কুল শেষে, স্কলারশিপ পাই। যার ফলে, পুণেতে ‘নিট’-এর প্রস্তুতি নিতে পেরেছি। সেখান থেকেই সাফল্য আসে। স্কলারশিপ না পেলে, হয়তো পরিবারের পক্ষে আমাকে কোচিং সেন্টারে ভর্তি করানো সম্ভব হত না। তবে বাবা বাগানের সামান্য শ্রমিক হয়েও, আমার পড়াশোনায় যথাসাধ্য সাহায্য করেছেন।’’
ভাটপাড়া আউট ডিভিশনের বাসিন্দা রিতা লামার বাবা চা বাগানের গাড়ি চালক। সাফল্যের কৃতিত্ব বাবাকে দিয়েই রিতা বলেন, ‘‘বাবা সব সময়ে উৎসাহিত করেছেন। উনিই সবচেয়ে বেশি খুশি।”
জেলা পুলিশের কোচিং সেন্টার থেকে বিনামূল্যে ‘নিট’-এর প্রশিক্ষণ পেয়েছিলেন ভার্নাবাড়ি চা বাগানের মনীশ মিঞ্জ। তাঁর বাবা ছোট ব্যবসায়ী, মা চা শ্রমিক। সাফল্যের জন্য লড়াই তাঁরও কিছু কম নয়। একই লড়াই পেরিয়েছেন কালচিনি বাগানের বুকিন বাড়ির বাসিন্দা নিধি লামাও।
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, ‘‘আমরা সব সময়ই চাই, প্রত্যন্ত এলাকা থেকে প্রতিভা তুলে আনতে। জেলার এই পড়ুয়াদের জন্য আমরা গর্বিত। আগামী দিনে আরও এমন প্রতিভাদের সাহায্য করতে আমরা তৈরি।’’