Child Marriage

লকডাউনে বাড়ছে নাবালিকা বিয়ে

মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত জলপাইগুড়ি চাইল্ড লাইনে ৪০টি নাবালিকা বিয়ের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। সেগুলি প্রশাসনের সহযোগিতায় বন্ধ করা গিয়েছে, জানাচ্ছেন চাইল্ড লাইন কর্তারা।

Advertisement

অর্জুন ভট্টাচার্য

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২০ ০৬:২৩
Share:

প্রতীকী ছবি

ফোন বেজে উঠল চাইল্ড লাইনের অফিসে। ফোনের ওপারের কথা শুনেই কর্মীরা দ্রুত ছুটলেন জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের দক্ষিণ বেরুবাড়ির এক গ্রামে। সেখানে পৌঁছে তাঁরা দেখেন, অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে পাশের গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের সহযোগিতায় দুই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে, বুঝিয়ে বিয়ে বন্ধ করা গিয়েছে। এরকমই একাধিক নাবালিকা বিয়ের অভিযোগ এসেছে জেলারা নানা প্রান্ত থেকে, বিশেষ করে লকডাউনের সময়ে জলপাইগুড়ি জেলায় নাবালিকা বিয়ে যথেষ্ট বেড়েছে বলে জানাচ্ছেন চাইল্ড লাইনের সদস্যদের একাংশ।

Advertisement

মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত জলপাইগুড়ি চাইল্ড লাইনে ৪০টি নাবালিকা বিয়ের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। সেগুলি প্রশাসনের সহযোগিতায় বন্ধ করা গিয়েছে, জানাচ্ছেন চাইল্ড লাইন কর্তারা। চাইল্ড লাইন সূত্রের খবর, জানুয়ারিতে ৪টি, ফেব্রুয়ারিতে ৩টি নাবালিকার বিয়ের অভিযোগ এসেছিল। মার্চে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২টি, এপ্রিলে ১১টি। মে থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত ১৭টি অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। চাইল্ড লাইনের তরফে সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘লকডাউনের সময়ে নাবালিকাদের বিয়ের সংখ্যা যথেষ্ট বেড়েছে। আমাদের কাছে এই সময়ে সব খবর আসছে না। তবুও খবর পেলেই আমরা ব্যবস্থা নিই।’’

খবর পেতে সমস্যা কেন হচ্ছে? স্কুল খোলা থাকলে কোনও ছাত্রী দীর্ঘ দিন অনুপস্থিত থাকলে শিক্ষিকারা খোঁজ নিতে পারতেন। অথবা কোনও ছাত্রীকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলে সে নিজেই তার বন্ধুদের অথবা শিক্ষিকাদের মাধ্যমে সাহায্য চাইতে পারত। স্কুল বন্ধ থাকায় যা হচ্ছে না। বেশিরভাগ স্কুলেই ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষকদের নিয়ে কন্যাশ্রী দল বা স্বয়ংসিদ্ধা দল গড়া হয়েছিল। যারা নাবালিকা বিয়ের খোঁজ আনার নির্ভরযোগ্য সূত্র ছিল। তারাও এখন কাজে আসছে না। জলপাইগুড়ি বিবেকানন্দ হাইস্কুলের সহকারি শিক্ষিকা সুমনা ঘোষ দস্তিদারের কথায়, ‘‘স্কুলে ছাত্রীরা মনের কথা খুলে বলে। তাতেই কাজ হতো।’’ জলপাইগুড়ি কুমুদিনী উচ্চমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা চুমকি ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমাদের স্বয়ংসিদ্ধা দলের মেয়েদের এখনও নাবালিকা বিয়ের খবর পেলেই পঞ্চায়েতস ও পুলিশে খবর দিতে বলা হয়েছে।’’

Advertisement

জলপাইগুড়ি জেলা শিশু সুরক্ষা সমিতির চেয়ারপার্সন বেবী উপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই সময়ে নাবালিকাদের বিয়ে অনেক বেড়েছে। এই বিষয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের নিয়ে দ্রুত সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’’ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদবও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement