উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
পড়ুয়াদের ‘বৃত্তি-দুর্নীতি’র অভিযোগে হইচই শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। একই পড়ুয়া বিভাগীয় প্রধানের সই নকল করে বিভিন্ন বিভাগের পড়ুয়া সেজে বৃত্তি তুলেছে বলে অভিযোগ। এই কাণ্ডের পিছনে বড় চক্র কাজ করছে বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছে সরকারি ‘অডিট-দল’।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রের খবর, আইন বিভাগের এক ছাত্র নিজেকে ইতিহাস, ইংরেজি, কম্পিউটার-সহ পাঁচটি বিভাগের পড়ুয়া হিসাবে দেখিয়ে বহু বার ‘ঐক্যশ্রী’র মতো একাধিক প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ। তেমন ‘নজির’ও একাধিক রয়েছে। বৃত্তির ওই টাকা পেতে পড়ুয়ারা নির্দিষ্ট 'ফর্ম'-এ আবেদন করেন। তাতে বিভাগীয় প্রধানের সই দরকার। পড়ুয়ারাই বিভাগীয় প্রধানকে দিয়ে সই করিয়ে, তা জমা দেন সংশ্লিষ্ট বিভাগে। সেখান থেকে তা রেজিস্ট্রারের দফতরে যায় অনুমোদনের জন্য। অনেক সময় বিভাগীয় প্রধানদের দফতর থেকেও তালিকা পাঠানো হয়। তার পরেও কী করে বিষয়টি নজর এড়িয়ে যেতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, বিভাগীয় প্রধানেরা জানেন না। অথচ, তাঁদের সই জাল করে বৃত্তির টাকা তুলেছেন পড়ুয়াদের একাংশ। দফতরের কর্মী-আধিকারিকদের একাংশ জড়িত না থাকলে, তেমন করা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহালেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিত বলেন, "একই ছাত্র কী করে একাধিক বিভাগের পড়ুয়া হিসাবে পরিচয় দিয়ে পাঁচ-ছয় বৃত্তির টাকা তুলেছেন, তা ভাবলে অবাক হতে হয়। এর সঙ্গে বড় চক্র জড়িত, আমরা নিশ্চিত। তদন্তকারীরাও সে সব নথি খতিয়ে দেখছেন। আমরা সমস্ত ভাবে সাহায্য করছি।"
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ওই সমস্ত বৃত্তিপ্রাপকের তালিকায় বহু অনিয়ম রয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। বৃত্তিপ্রাপকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করে, অন্যত্র কাজ বা গবেষণা করছেন। অভিযোগ, পড়ুয়াদের একাংশকে ‘টোপ’ দিয়ে বৃত্তির টাকা তুলতে সক্রিয় রয়েছে একটি চক্র। সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের জন্য যেমন ‘ঐক্যশ্রী’র বৃত্তি রয়েছে, তেমনই রাজ্য সরকারের এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন বৃত্তি রয়েছে। সে সব ক্ষেত্রে টাকা তোলায় ‘বেনিয়ম’ নজরে আসার পরেই বিশেষ অডিট দল তদন্তে নেমেছে।