Bangla Bandh Today

বন্‌ধে ধুন্ধুমার শিলিগুড়িতে, বিধায়ক শিখাকে মারধরের অভিযোগ, টেনেহিঁচড়ে বিক্ষুব্ধদের সরাল পুলিশ

বন্‌ধের সমর্থনে নিউ জলপাইগুড়িতে পথে নেমেছিল বিজেপি। ছিলেন ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে ঘিরে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখান এবং মারধর করেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৪ ১৪:২৫
Share:

নিউ জলপাইগুড়িতে বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে বিক্ষোভ, উত্তেজনা। — নিজস্ব চিত্র।

নবান্ন অভিযানে পুলিশি তৎপরতার বিরুদ্ধে বুধবার ১২ ঘণ্টার বাংলা বন্‌ধ ডেকেছে বিজেপি। তাকে কেন্দ্র করে অশান্তি শিলিগুড়িতে। বিজেপির সাংসদ এবং বিধায়ককে ঘিরে তৃণমূল কর্মীদের বচসায় নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের কাছে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। টেনেহিঁচড়ে বিক্ষুদ্ধদের সরিয়ে কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে পুলিশ। স্টেশন চত্বরে বিজেপির ধর্না কর্মসূচি চলছে। নেতৃত্বে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

বুধবারের বন্‌ধের প্রভাব সকাল থেকেই পড়েছে শিলিগুড়ি শহর এলাকায়। রাস্তায় যান চলাচল অন্যান্য দিনের চেয়ে ছিল কম। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বন্‌ধের সমর্থনে পথে নেমে পড়েন বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা। জলপাইগুড়ি লাগোয়া ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হলদিবাড়ী থেকে নিউ জলপাইগুড়িগামী ট্রেন আটকে দেওয়া হয়। বিধায়ক শিখার নেতৃত্বে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা স্টেশন চত্বরে ধর্নায় বসতে এলে তাঁদের উপর তৃণমূল হামলা চালায় বলে অভিযোগ। মুহূর্তে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। শিখাকে ঘিরে স্লোগান ওঠে। অভিযোগ, তাঁদের মাটিতে ফেলে মারধর করা হয়।

এ প্রসঙ্গে শিখা বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা এসে আমাদের লোকজনকে বেল্ট খুলে মারতে শুরু করে। সবাই বলছিল, এটা উত্তপ্রদেশ না, এটা বাংলা। আমার গায়েও হাত দিয়েছে ওরা। সঙ্গে অকথ্য গালিগালাজ করেছে। পুলিশ না আটকালে আমাদের মেরেই ফেলত। আমাদের সাংসদকেও মেরেছে। তবে পুলিশ ওদের কাউকে ধরেনি।’’ আক্রান্ত বিধায়ক আরও বলেন, ‘‘এরা মনে করেছে, এটা পাকিস্তান বা বাংলাদেশ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এরা এখনও বোঝেনি, এখানে হিন্দুরা আছে। তারা এটা বাংলাদেশ হতে দেবে না। মেরে আমাদের দমানো যাবে না। আমরা এখানে ধর্না চালিয়ে যাব।’’

Advertisement

বিধায়ককে ঘিরে বিক্ষোভে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে কিছু ক্ষণ পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছন জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়। তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখানো হয় বলে অভিযোগ। তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়। পুলিশ পরে সাংসদকে এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়। জয়ন্ত বলেন, ‘‘নবান্ন অভিযানে ছাত্রদের উপর পুলিশ যে ভাবে অত্যাচার করেছে এবং মহিলারা এ রাজ্যে এখনও যেমন অসুরক্ষিত অবস্থায় আছেন, তার বিরুদ্ধে আমরা বন্‌ধ ডেকেছি। সর্বত্র শান্তিপূর্ণ বন্‌ধ হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ ভাবে আমরা মানুষের কাছে অনুরোধ করতে এসেছি, যাতে তাঁরা বন্‌ধকে সমর্থন করেন। এখানে ধর্না দিচ্ছিলেন আমাদের বিধায়ক। সেই সময় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা এসে মারধর শুরু করে। পুলিশের চোখের সামনেই গোলমাল হয়। পুলিশ উল্টে আমাদের লোকজনকে টেনেহিঁচড়ে থানায় নিয়ে যায়। তৃণমূলের কাউকে পুলিশ ধরেনি।’’ পুলিশের ভূমিকা প্রসঙ্গে সাংসদ আরও বলেন, ‘‘এ ভাবে পুলিশকর্মীরা নিজেদেরও অসুরক্ষিত করছেন। আমাকেও মারতে এসেছিল তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। পুলিশ আমাকে চলে যেতে বলেছে। চলে যাওয়ার জন্য তো আমি আসিনি। পুলিশ বলেছে, আমি থাকলে গোলমাল হবে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা যেখানে নেই, জনপ্রতিনিধি নিরাপত্তা নিয়ে কী করবেন?’’

উল্লেখ্য, আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রতিবাদে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজ’ নামের এক সংগঠন নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল। তাকে সমর্থন জানিয়েছিল বিজেপি। কলকাতা এবং হাওড়ায় ওই কর্মসূচি ঘিরে ব্যাপক গোলমাল হয়েছে। জলকামান, কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। ২০০-র বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নবান্ন অভিযানে পুলিশের ধরপাকড়ের বিরুদ্ধে বুধবা বন্‌ধ ডেকেছে বিজেপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement