কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী প্রহ্লাদ সিংহ পটেল। ফাইল চিত্র।
বিমানবন্দরের লাইন্সেস বাতিল নিয়ে এ বারে সরাসরি রাজ্য সরকারকে দুষলেন কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী প্রহ্লাদ সিংহ পটেল। বুধবার কোচবিহার সফরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, উত্তরবঙ্গে পর্যটনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বিমানবন্দর খুব জরুরি। কিন্তু রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার জন্য তা চালু করা যায়নি। পাশে বসে থাকা কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিককে দেখিয়ে তিনি বলেন, “সাংসদ বিমান চলাচলের জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলেন কিন্তু রাজ্য সরকার সহযোগিতা করেনি।” তবে বিমানবন্দর চালু করতে নতুন করে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান তথা অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “বিজেপি সরকার কোচবিহার থেকে বিমান চলাচল করতে ইচ্ছুক নয়। রাজ্য সরকার সমস্ত পরিকাঠামো তৈরি করে দেওয়ার পরেও তারা বিমানবন্দরের লাইন্সেস বাতিল করেছেন। পর্যটনের উন্নতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছেন। বিজেপি এত দিন কিছু বলেনি, ভোটের মুখে মিথ্যে গল্প নিয়ে হাজির হয়েছে।”
বিজেপি সূত্রে খবর, প্রহ্লাদ সিংহকে উত্তরবঙ্গের দায়িত্ব দিয়েছে দল। বিধানসভা নির্বাচনের আগে পর্যন্ত তিনি সেখানে টানা প্রচার চালাবেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি সপ্তাহে দু’দিন উত্তরবঙ্গ সফর করবেন। পর্যটন মন্ত্রী হওয়ায় তিনি উত্তরবঙ্গের পর্যটনের বিকাশ নিয়েই বেশি আগ্রহ দেখিয়েছেন। এক দিকে পাহাড়, ডুয়ার্সে ‘হোম স্টে’ থেকে শুরু করে নানা পরিকল্পনা নেওয়ার কথা যেমন জানিয়েছেন, তেমনই কোচবিহারের মতো জায়গাকে ইতিহাসের দিক গুরুত্ব দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন।
এ দিন সকালে তিনি বাণেশ্বর শিবমন্দিরে যান। সেখান থেকে বেরিয়ে দলীয় কর্মসূচি সেরে রাজবাড়ি পৌঁছন। রাজবাড়ি ঘুরে দেখার পরে সেখানে আরও কী কী পদক্ষেপ করা যেতে পারে তা নিয়ে সাংসদ ও পুরাতত্ব সর্বেক্ষণের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, “রাজবাড়ি অনেক দেরি করে পুরাতত্ব সর্বেক্ষণের হাতে এসেছে। আগে এলে আরও ভাল হত। এখনও যা যা রাজবাড়িতে রয়েছে তা আমাদের গর্বের বিষয়। আন্তর্জাতিক পর্যটকদেরও এই প্রাসাদ আকর্ষণ করবে। এটা নিয়ে আরও চিন্তাভাবনা করা হবে।”
পরে তিনি গোসানিমারি রাজপাট ঢিবিতে যান। সেখানে দু’দশক আগে খননকাজ শুরু হলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। নতুন করে সেই খননকাজ শুরুর বিষয়ে আশ্বস্ত করেন তিনি। পরে ধূপগুড়ি ও চালসাতেও যান কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী। সেই সঙ্গেই দলীয় কর্মীদের নিয়েও একাধিক বৈঠক করেন। জেলা বিজেপি সূত্রে খবর, তৃণমূলের মোকাবিলায় কী ভাবে কাজ করতে হবে তা নিয়ে জেলার কর্মী-নেতাদের পরামর্শ দেন। বিজেপির কোচবিহার জেলার এক নেতা বলেন, “পর্যটনের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার একটা বড় সম্পর্ক রয়েছে। সে কারণেই বিমানবন্দর নিয়ে স্পষ্ট ভাবে সব জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।”