প্রতীকী চিত্র
একশো দিনের কাজের প্রকল্পে খরচের হিসেব পরীক্ষা করতে জলপাইগুড়িতে আসছে কেন্দ্রীয় অডিট দল, চিঠি দিয়ে জানাল দিল্লি। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের অভ্যন্তরীন অডিটের চিফ কন্ট্রোলার অব অ্যাকাউন্টস দফতর থেকে রাজ্যকে চিঠি পাঠিয়ে জলপাইগুড়ি জেলায় অডিটের কথা জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় দলের আসার খবর আনন্দবাজার পত্রিকাই প্রথম করে।
দিল্লির চিঠিতে জানানো হয়েছে, বিগত চারটি আর্থিক বছরে একশো দিনের কাজের সব প্রকল্পের নথিপত্র প্রস্তুত রাখতে। দুই সদস্যদের অডিট দল জেলায় আসবেন। চিঠি অনুযায়ী তাঁরা মূলত দেখবেন যে একশো দিনের বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্যের মাধ্যমে কত টাকা জেলায় এসেছে এবং জেলা থেকে সেগুলি কী ভাবে উপভোক্তাদের হাতে গিয়েছে। ১৪-১৮ সেপ্টেম্বর জলপাইগুড়িতে কেন্দ্রীয় দলের অডিট হবে।
অগস্টে দলটির জেলায় আসার কথা ছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে সেবার দিল্লি থেকে রাজ্য বা জেলাকে কোনও চিঠি পাঠানো হয়নি বলে খবর। ওই দল এলেও করোনা আবহে তাঁদের কতটা সাহায্য করা যাবে তা নিয়ে জেলার একটি সূত্র থেকে আশঙ্কা করা হয়েছিল। অগস্টে দিল্লি ওই দল পাঠায়নি। এ বার সেপ্টেম্বরের গোড়াতে দিল্লি থেকে অডিটের বিষয়টি নিয়ে সরকারি ভাবে চিঠি দেওয়া হয়েছে। দলে কারা থাকবেন তাঁদের নামও জানিয়ে দিয়েছে দিল্লি। রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের সঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনকেও দিল্লি চিঠির প্রতিলিপি পাঠিয়েছে। সূত্রের খবর, জেলা প্রশাসন থেকে প্রতিটি পঞ্চায়তকে অডিটের কথা জানিয়ে নথি প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কেন জলপাইগুড়িতে কেন্দ্রীয় অডিট দল আসছে তা নিয়েও প্রশাসনিক স্তরে নানা ব্যাখ্যা ঘুরছে। লকডাউনের সময়ে মে থেকে জলপাইগুড়ি জেলায় একশো দিনের কাজে শ্রমিক এবং পরিবারের সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। সাধারণত বছরে গড়ে জলপাইগুড়িতে যত শ্রমিক একশো দিনের কাজ পেয়ে থাকেন চলতি বছরের মে-জুনে তার থেকে ১১ গুণ বেশি শ্রমিক কাজ পেয়েছেন। লকডাউনের কয়েকমাসে শ্রম দিবস বেড়েছে ১৫ গুণ পর্যন্ত। যা দিল্লির নজরেও পড়েছে। সে কারণেই অডিট বলে একটি ব্যাখ্যা রয়েছে। যদিও আর একটি ব্যাখায় দাবি, গত চার বছরের হিসেব দেখবে অডিট দল। শুধুমাত্র দু’তিন মাসের কাজ তারা দেখতে আসছেন না। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সব জেলাতেই এই অডিট হবে বলে দাবি।
জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর মন্তব্য, “দিল্লি হাজার দল পাঠালেও পশ্চিমবঙ্গে কোনও মাটিই পাবে না।” বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর কটাক্ষ, “তৃণমূলের মিছিলে যাওয়ার বিনিময়ে একশো দিনের কাজের মজুরি পাইয়ে পুরস্কার দেওয়া হয়। দেখা যাক এগুলি অডিটে ধরা পড়ে কিনা!”