—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্পের কাজ দেখতে শিলিগুড়িতে আসতে চলেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। প্রকল্পের বরাদ্দ টাকার কাজ কতটা, কী ভাবে হয়েছে সেই সংক্রান্ত বিষয় খতিয়ে দেখার কথা কেন্দ্রীয় দলের। প্রশাসন সূত্রে খবর, শিলিগুড়িতে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভা হওয়ার কথা। তার আগে, কেন্দ্রীয় দল আসার খবরে নড়চড়ে বসেছে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ। শুক্রবার পরিষদের বৈঠকে সমস্ত কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজের হিসাব খতিয়ে দেখেন সভাধিপতি। স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্পের পড়ে থাকা টাকা স্বচ্ছ ভাবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যয় করে কাজ শেষের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সভাধিপতি অরুণ ঘোষ বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় দল আসবে। কিন্তু কবে আসবে, জানানো হয়নি। প্রত্যেক বারের মত এ মাসেও উন্নয়নমূলক কাজের বিষয়ে বৈঠক হয়েছে। স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্পের সঙ্গে অন্যান্য প্রকল্পগুলির কাজ ভাল ভাবে হচ্ছে।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, মহকুমার ২২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি গ্রামও এখনও ‘মডেল’ গ্রাম হয়নি। অথচ, চলতি অর্থ-বছরের জানুয়ারির মধ্যে প্রত্যেকটি গ্রামকে ‘মডেল’ গ্রাম করার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে, যা কার্যত সম্ভব নয় বলে দাবি পঞ্চায়েতের অফিসারদের। ‘মডেল’ গ্রাম হতে গেলে, গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে ‘সলিড ওয়েস্ট’ (কঠিন বর্জ্য), ‘লিকুইড ওয়েস্ট’, প্লাস্টিক আবর্জনা প্রক্রিয়াকরণ এবং ‘সোক-পিট ট্যাঙ্ক’ তৈরি করতে হবে। এই কাজগুলি স্বচ্ছ ভারত মিশন গ্রামীণ প্রকল্পের অধীন। মহকুমার ২২টি পঞ্চায়েতের মধ্যে সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েতে কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা রয়েছে। একমাত্র বুড়াগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতে রয়েছে প্লাস্টিক আবর্জনা প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা। অভিযোগ, আবর্জনা সংগ্রহ হয় না, কোথাও আবার আবর্জনা থেকে সার তৈরির যন্ত্র বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। কোথাও জমা আবর্জনার দুর্গন্ধে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। মহকুমায় এই প্রকল্পে এখনও ২৫ কোটির বেশি টাকা পড়ে রয়েছে। প্রশাসন সূত্রের দাবি, অনেক ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম পাল্টে ‘নির্মল বাংলা’ করা হয়েছে, কোথাও বরাদ্দ কাজের ফলক দেওয়া হয়নি। সে বিষয়গুলি তদন্তকারী দল খতিয়ে দেখতে পারে।
কেন্দ্রীয় দল তদন্তে এলে, ‘দুর্নীতি’ ধরা পড়বে বলে দাবি বিজেপির। মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মণের অভিযোগ, ‘‘একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনা প্রকল্পের মতো স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্পের কাজে দুর্নীতি হয়েছে। কেন্দ্রীয় দল রাজ্যে এলে তৃণমূলের ভয় হওয়া স্বাভাবিক। কারণ, রাজ্যের শাসক নেতারা এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।’’
পক্ষান্তরে, মুখ্যমন্ত্রীর সভার আগে কেন্দ্রীয় দলের তদন্তে আসা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে তোপ দেগেছেন তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা (সমতল) সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় দল পাহাড়ের হাওয়া খেতে আসতেই পারে। দিদিকে ধমকে-চমকে
কাজ হবে না।’’