West Bengal SSC Scam

Subiresh-CBI: তিনটি বিষয়েই খুঁটিয়ে  প্রশ্ন উপাচার্য সুবীরেশকে

সিবিআই সূত্রের দাবি, এর পরে, তাঁকে বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতায় পৌঁছতে বলা হয়।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২২ ০৯:০২
Share:

গন্তব্যে: কলকাতার উড়ান ধরতে বাগডোগরা বিমানবন্দরে সস্ত্রীক উপাচার্য। ছবি: স্বরূপ সরকার।

শিলিগুড়ি ছাড়ার আগে, বাগডোগরা বিমানবন্দরে বলেন, ‘‘আমি কিছু বলব না।’’ আর কলকাতা পৌঁছে বাঁশদ্রোণীর বাড়ির সামনে বলেন, ‘‘আমার আমলে কোনও দুর্নীতি হয়নি। সিবিআইয়ের উপর আমার ভরসা রয়েছে।’’ কিন্তু সিবিআই সূত্রের দাবি, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্যের আমলেই স্কুল সার্ভিস কমিশনে (এসএসসি) ‘দুর্নীতি’ হয়েছে বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন। সিবিআই সূত্রের খবর, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় দশ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু ‘অসঙ্গতি’ সামনে আসে। নতুন কিছু নথিপত্র দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উপাচার্যকে কলকাতায় যেতে বলেন সিবিআই আধিকারিকেরা। বৃহস্পতিবার উপাচার্য কলকাতায় আসেন। পরে, দক্ষিণ কলকাতার বাঁশদ্রোণীর ফ্ল্যাটে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা দ্বিতীয় দফায় নথিপত্র নিয়ে গিয়ে উপাচার্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

Advertisement

সিবিআই সূত্রের খবর, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল অবধি এসএসসি-র চেয়ারম্যান হয়েছিলেন সুবীরেশ। সে সময় ১৩ তম ‘রিজিওনাল লেভেল সিলেকশন টেস্ট’-এ (আরএলএসটি) মূলত গ্রুপ-সি নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। পরে, গ্রুপ-ডি নিয়োগ নিয়েও নানা অভিযোগ সামনে আসে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আর কে বাগের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটির রিপোর্টে সুবীরেশের নাম ‘দুর্নীতির’ সঙ্গে জড়িয়ে যায়। ৩৮১টি নিয়োগের ‘অসঙ্গতি’ সামনে আসে। হাই কোর্টে সে রিপোর্ট জমা পড়েছে। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও এসএসসি-র দুই উপদেষ্টা গ্রেফতার হওয়ার পরে, তাঁদের জেরা করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান চালায় সিবিআই। সুবীরেশ প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর ‘অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ’ বলেই অনেকের কাছে পরিচিত।

এসএসসি-র তরফে ‘রিজিওনাল লেভেল সিলেকশন টেস্ট’ ছাড়াও, ২০১৪-২০১৫ সালের ‘টিচার্স এলিজিবিলিটি টেস্ট’ (টেট)-এ যাবতীয় নিয়োগ প্রক্রিয়ার তথ্য এবং তাতে সুবীরেশের ভূমিকা নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দু’টি নিয়োগ প্রক্রিয়া কী ভাবে হয়েছে, কারা তাতে জড়িত ছিলেন জানতে চাওয়া হয়। নথিপত্র থাকলে, তা চাওয়া হয়। সবই আইন মেনে হয়েছিল বলে দাবি করেছেন উপাচার্য। পরে, কলকাতা হাই কোর্টে জমা পড়া রিপোর্টে ‘অন্য কথা’ রয়েছে কেন তা-ও তাঁর কাছে জানতে চান গোয়েন্দারা। তাতে খুব বেশি কথা তিনি বলেননি। শেষে, তাঁর চার বছরের মেয়াদকালে এসএসসি-র আঞ্চলিক কর্তাদের ‘অটো জেনারেটেড সই’ দিয়ে নিয়োগের ব্যাপারে তিনি কী জানেন, তা তদন্তকারীরা জানতে চান। সেখানেও উপাচার্য আইন ভেঙে কিছু করেননি বলে দাবি করেছেন।

Advertisement

সিবিআই সূত্রের দাবি, এর পরে, তাঁকে বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতায় পৌঁছতে বলা হয়। এ দিন সকালেই শিলিগুড়ি থেকে বিমানে সস্ত্রীক কলকাতায় রওনা হন উপাচার্য। সকাল ৯টা ২০ মিনিট নাগাদ তিনি বাগডোগরা বিমানবন্দরে ঢোকেন। সিবিআইয়ের যে দলটি বুধবার সুবীরেশকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল, এ দিন তারা উপাচার্যের কাছ থেকে পাওয়া নথিপত্র গোছানোর কাজে ব্যস্ত ছিল। তা ছাড়া, উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে খোঁজখবরও নিয়েছে তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement