Tiger Hills

টাইগার হিলের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, মামলা

টাইগার হিলের পরিবেশ নিয়ে এই মামলার জেরে পর্যটনের ক্ষেত্রে জটিলতা আসতে পারে বলেও অনেকের আশঙ্কা।

Advertisement

সৌমিত্র কুন্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:৩১
Share:

জাতীয় পরিবেশ আদালত। —ফাইল চিত্র।

দার্জিলিঙের টাইগার হিলের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে কয়েক দিন আগে পরিবেশ আদালতে মামলা করেছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত।

Advertisement

গত বুধবার বিচারপতি বি অমিত স্থালেকর এবং অরুণকুমার বর্মার বেঞ্চে তার প্রথম শুনানি হয়। অভিযোগ, ৮ হাজার ফুট উচ্চতায় সিঞ্চল বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্যের অন্তর্গত ওই এলাকায় অবাধে নির্মাণ চলছে। কংক্রিটের নির্মাণ চলছে, লোহার কাঠামো বসছে, বড় বড় একাধিক মোবাইল টাওয়ার বসানো হয়েছে। লোকবসতি ও পর্যটকের চাপ, সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দূষণ। এলাকায় বিভিন্ন উদ্ভিদ,পশুপাখিদের অস্তিত্ব চরম সঙ্কটের মুখে। আদালত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরকে নোটিস করেছে। চার সপ্তাহের মধ্যে পুর এবং নগরোন্নয়ন দফতর, বন ও পরিবেশ এবং আবহাওয়া পরিবর্তন মন্ত্রক, রাজ্যের বন ও পরিবেশ দফতর, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, দার্জিলিং পুরসভার চেয়ারম্যান, জেলাশাসকদের হলফনামা দিয়ে জবাব দিতে বলেছে। আগামী ১৫ মে ওই মামলারফের শুনানি।

টাইগার হিলের পরিবেশ নিয়ে এই মামলার জেরে পর্যটনের ক্ষেত্রে জটিলতা আসতে পারে বলেও অনেকের আশঙ্কা। পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থাকে নিয়ে গঠিত হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যালের কথায়, ‘‘টাইগার হিল স্বাধীনতার আগে থেকেই পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে উঠে এসেছে। দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে টাইগার হিল আকর্ষণীয়। বহু মানুষের জীবনজীবিকা এর উপর নির্ভরশীল। পর্যটকদের গাড়িও এখন কুপন পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আমরাও পর্যটকদের পরিবেশ নিয়ে সব সময় সচেতন করি। মামলার বিষয়টি নিয়ে আদালত কী বলছে, আমরা সে দিকে নজর রাখছি।’’তাঁদের আশা, সরকারও সে ভাবেই প্রয়োজন মতো পদক্ষেপ করবে। এ ব্যাপারে জিটিএ-র চিফ এগজ়িকিউটিভ অনীত থাপা এ দিন জানান, মামলার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তবে তিনি বলেন, ‘‘বনাঞ্চল রক্ষার কাজে আমরা জোর দিয়েছি। বাসিন্দাদের সচেতন করছি। সমস্ত ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে।’’

Advertisement

মামলাকারী সুভাষ দত্তের অভিযোগ, ‘‘সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে যদি পরিবেশ এ ভাবে বিপন্ন হয় তা হলে আমাদের দুঃখের দিন আসছে। পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে যে সব কারণে, তার বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, টাইগার হিলে অতিকায় কংক্রিটের ‘ভিউ টাওয়ার’ তৈরি করা হচ্ছে। একাধিক অতিকায় মোবাইল টাওয়ার গড়ে উঠেছে। পর্যটকদের আনাগোনা বেড়ে ওঠায় বর্জ্য জমা হচ্ছে। তার মধ্যে প্লাস্টিকের ক‌্যারিব্যাগের মতো বর্জ্যও রয়েছে। সেগুলো কখনও পুড়িয়ে দেওয়া হয়, কোনও সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থা নেই। তিনি জানান, টাইগার হিলের ঠিক নীচে বস্তি এলাকায় জনবসতি বাড়ছে। অথচ, কোনও নিকাশি ব্যবস্থা নেই। তা ছাড়া, টাইগার হিলে রেস্ট হাউস বা গেস্ট হাউসের কংক্রিটের পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে।

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘আদালতের নথি পাইনি। ওটা পেলে সেই মতো বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে আমাদের মতামতজানানো হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement