রেকর্ড ব্যবসা, আমের মরসুম শেষে খুশি জেলার ব্যবসায়ীরা

স্বাদে যেমন লড়াই চলে, তেমনই এ বারে দামেও চলল লড়াই। ময়দানে যুযুধান ফলের রাজারা। গোপালভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়ার সঙ্গে দামে সমানে টেক্কা দিল ফজলি, রাখালভোগ। পিছিয়ে নেই আর্সিনাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৬ ০২:২৯
Share:

মালদহে আমের পসরা। — নিজস্ব চিত্র

স্বাদে যেমন লড়াই চলে, তেমনই এ বারে দামেও চলল লড়াই। ময়দানে যুযুধান ফলের রাজারা। গোপালভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়ার সঙ্গে দামে সমানে টেক্কা দিল ফজলি, রাখালভোগ। পিছিয়ে নেই আর্সিনাও।

Advertisement

চলতি মরসুমে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মালদহ জেলায় চড়া দামে বিকিয়েছে এই সুস্বাদু আমগুলি। আর এর ফলে দারুণ লাভবান হয়েছেন আম চাষি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী মহল। এ বারে জেলাতে সর্বকালীন রেকর্ড পরিমাণে আমের ব্যবসা হয়েছে বলে দাবি উদ্যান পালন দফতরের। তাঁদের কথায়, চলতি বছর এখন পর্যন্ত আড়াইশো কোটি টাকার মতো লাভ হয়েছ জেলায় আম ব্যবসায়। দফতরের সহ অধিকর্তা রাহুল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ বার শুরু থেকেই আমের বাজার বেশ ভালো। অন্যান্য রাজ্য গুলিতে তেমন এবারে আমের ফলন না হওয়ায়, এই জেলার আমের ভালো চাহিদা ছিল। যার জন্য চলতি বছর সর্বকালীন রেকর্ড পরিমানে আমের ব্যবসা হয়েছে।’’

তবে জেলায় কয়েকশো কোটি টাকা আমের লাভের মুখ দেখলেও বিদেশে আম রফতানি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ জেলার ব্যবসায়ী মহল। মালদহের মার্চেন্ট চেম্বার অফ কর্মাসের সম্পাদক তথা এক্সপোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সহ সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘‘আড়াইশো কোটি টাকা চলতি মরসুমে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হয়েছে ঠিকই। তবে বিদেশে আম রফতানি হলে লাভের পরিমাণ আরও কয়েকগুণ বেড়ে যেত।’’ আগামী মরসুমে মালদহের আম বিদেশে রফতানির জন্য রাজ্য এবং কেন্দ্র সরকারকে চিঠি দেওয়া কথা বলেছেন উজ্জ্বল বাবু।

Advertisement

উদ্যান পালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছর জেলাতে ৩০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ২ লক্ষ ৬০ হাজার মেট্রিক টন। তবে বিগত বছর জেলাতে আম উৎপাদন হয়েছিল সাড়ে চার লক্ষ মেট্রিক টন। কিন্তু প্রচুর পরিমানে আম উৎপাদন হওয়ায় গতবার চাষিরা তেমন দাম পাননি। অন্য রাজ্যেও উৎপাদন ভাল হওয়ায় মালদহের আমের তেমন চাহিদা ছিল না। ফলে লোকসানের মুখ দেখতে হয়েছিল চাষি ও ব্যবসায়ীদের। তবে চলতি মরসুমে শুরু থেকেই শেষ পর্যন্ত চড়া দামে আম বিক্রি হয়েছে জেলাতে। ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার মরসুমের শুরু থেকেই আমের দাম বেশ চড়া। বাগানগুলিতে গোপালভোগ ৩৫ টাকা, হিমসাগর ৩০ টাকা, ল্যাংড়া ২৮ টাকা, লক্ষণভোগ ১৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। আর খুচরো বাজারে এই আম গুলিই আবার দ্বিগুন দামে বিক্রি হয়েছে। মরসুমের শেষেও আমে হাত দিতে ছ্যাঁকা লাগছে। সপ্তাহখানেক ধরে ফজলি ৪৫ টাকা, বৃন্দাবনী ৪৬ টাকা এবং উত্তরপ্রদেশের চোসা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এমনকী, টক-মিষ্টি স্বাদের আর্সিনাও বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজি দরে।

তাই আম কিনতে আমজনতার হাত পুড়লেও স্বস্তির হাসি হাসছেন ব্যবসায়ীরা। আম ব্যবসায়ী সুব্রত মন্ডল, উজ্জ্বল চৌধুরীরা বলছেন, ‘‘গত বছর আমাদের ব্যাপক লোকসান হয়েছিল। এ বার সেই ক্ষতে যেন মলমের প্রলেপ পড়ল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement