বেপরোয়া: একহাতে সাইকেল, কানে ফোন। পিছনে বাস আসছে কি না, পরোয়াই নেই। বালুরঘাটের রাস্তায়। ছবি: অমিত মোহান্ত
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা। বালুরঘাট শহরের পুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা। তিন রাস্তার সংযোগস্থল। বালুরঘাট শহর থেকে গোটা রাজ্যের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগে ব্যস্ততম ওই তিন মাথার মোড়ে প্রধান ট্র্যাফিক পোস্ট। মোড়ের উঁচু পোস্টে বসে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বৈদ্যুতিন ট্রাফিক সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। কখনও পুলিশও দায়িত্বে থাকেন।
এ দিন তাঁদের নাকের ডগাতেই দেখা গেল হেলমেটহীন বাইকচালক থেকে টোটোর বেপরোয়া গতি। পথ নিরাপত্তা সপ্তাহে এ যেন এক জলজ্যান্ত প্রহসন! মোড়ের পাশে ‘সেভ ড্রাইভ সেফ লাইফে’র প্রচার ক্যাম্পে থাকা পুলিশ ও সিভিকদের এড়িয়ে ব্যস্ত মোড়ে মোবাইলে কথা বলতে বলতে অনায়াসে রাস্তা পার হতে দেখা গেল কয়েকজন পথচারী ও বাইক আরোহীকে। লাল সিগন্যাল পড়ায় এক বাইকচালক গতি কমাতেই সহসা পিছনে ছুটে আসা একটি টোটো ওই বাইকের পিছনে এসে মারল ধাক্কা। আঘাত ততটা জোরে ছিল না। দু’পক্ষের তর্ক সপ্তমে উঠতে যাবে, তার আগেই সবুজ বাতি। ট্র্যাফিকের দায়িত্বে থাকা এক সিভিক ভলান্টিয়ার কটমট করে তাঁদের দিকে তাকাতেই বাইক ও টোটো দু’জন দুদিকে ভোঁ-ভাঁ।
সোমবার থেকে শুরু হয়েছে পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ। পুলিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে খোদ দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক নিখিল নির্মল রাস্তায় নেমে গাড়ি পরীক্ষা করে সকলকে সচেতনতা বার্তা দিয়েছেন। পুলিশ এবং আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরও জনতাকে সচেতন করতে ‘সেভ ড্রাইভ সেফ লাইফে’র ট্যাবলো বের করে প্রচার ও পদক্ষেপ করে। পথনিরাপত্তা সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনেও বিনা হেলমেটধারী বাইক চালকদেরও সেই পুরনো চোর-পুলিশ খেলতে দেখে অনেকেই হতাশ। বাসস্ট্যান্ডের ট্র্যাফিক মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশকে এড়িয়ে পাশের মিনিমার্কেটের গলির রাস্তা ধরে ফের ওপারে বাসস্ট্যান্ডের পিছনে গিয়ে মূল রাস্তা ধরে ফের ছুটেছে একাধিক বাইক।
মাত্র পাঁচদিন আগে কুমারগঞ্জে সমজিয়া এলাকায় বাইকের সঙ্গে ছোটগাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই বাইক আরোহী বিপ্লব বর্মণ ও মৃদুল বর্মণের মৃত্যু হয়। অপর এক বাইক আরোহী যুবক গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। হতাহত ওই তিনজনের কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না বলে পুলিশ জেনেছে।