শোক: মৃত মেয়ের শোকে নির্বাক বাবা বাড়ির বারান্দায় বসে আছেন। নিজস্ব চিত্র।
খেজুর গুড়ের পায়েস খুব ভালবাসত আমাদের সোনাই (সুতপা)।
আমার হাতে রান্না করা পায়েস ওর কাছে ছিল অমৃত সমান। সোনাইয়ের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে দিন কয়েক আগে যখন কথা হচ্ছিল, সে সময় পায়েস খাওয়ার আব্দার করেছিল ও। বহরমপুরের মেস বাড়ি থেকে আমাদের সঙ্গে দেখা করতে গত বৃহস্পতিবার কয়েক ঘণ্টার জন্য যখন মালদহের এয়ারভিউ কমপ্লেক্সের বাড়িতে সোনাই এসেছিল, ওর হাতে বড় একটি টিফিন বাক্সে খেজুর গুড়ের তৈরি করা পায়েস ভরে দিয়েছিলাম। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল।
সে দিন বাড়িতে আরাধ্য দেবতাকে ভোগ দেওয়া হয়েছিল। মেসের বান্ধবীদের খাওয়াবে বলে তা-ও কিছুটা নিয়ে গিয়েছিল সোনাই। বান্ধবীরা তা খেয়ে খুব প্রশংসা করে। সেই রাতে ভিডিয়ো কল করে সে কথা নিজেই জানিয়েছিল সোনাই। এ-ও জানিয়েছিল যে, ওর সাধের পায়েস কিন্তু বান্ধবীদের দেয়নি। কিছুটা খেয়ে বাকিটা মেস মালিকের বাড়ির ফ্রিজে রেখে দিয়েছিল, পরদিন খাবে বলে।
আর পায়েস খেতে চাইবে না সোনাই। মা বলে ডাকবেও না! সেই বৃহস্পতিবারের দেখাই যে শেষ দেখা হবে, তা যদি আগে জানতাম, তবে মেয়েকে বহরমপুরের মেসে ফিরে যেতে দিতাম না। ভাবতেই পারছি না যে, আমার এত সুন্দর ফুটফুটে মেয়েকে এমন নৃশংসনভাবে একজন খুন করতে পারে। কী দোষ করেছিল আমার মেয়ে? দিনের পর দিন আমার মেয়েকে উত্যক্ত করা হয়েছে নানাভাবে। আমার মেয়ের মধ্যে ওই যুবকের প্রভাব যাতে কোনও রকমে না পড়ে, সে জন্য তিন বছর ধরে বাড়িতে না রেখে মেয়েকে বহরমপুরের মেস বাড়িতে রেখেছিলাম। সেখানে থেকেই লেখাপড়া করছিল। মেয়ে লেখাপড়া করে নিজের পায়ে দাঁড়াতেও চেয়েছিল। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল। ওই অভিযুক্ত যুবক কোনও মতেই যেন ছাড়া না পায়। তার ফাঁসি চাই আমি।