নিহত ধনেশ রায়ের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। নিজস্ব চিত্র
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ ময়নাগুড়ির তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের দেহ উদ্ধার হল ধরলা নদী থেকে। মৃতের নাম ধনেশ রায়। মাধবডাঙা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩৩ নম্বর বুথের পঞ্চায়েত সদস্য, পেশায় পাট ব্যবসায়ী ধনেশের পরিবারের দাবি, খুন করা হয়েছে তাঁকে। ‘রহস্যজনক’ এই মৃত্যুর তদন্তে নেমে এ দিন রাতেই পুলিশ পম্পা সরকার ও অজিত সরকার নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। ময়নাগুড়ি থানার আইসি তমাল দাস জানিয়েছেন, আজ, সোমবার ধৃতদের জলপাইগুড়ি জেলা দায়রা আদালতে হাজির করানো হবে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে স্কুটি নিয়ে এক পাট ব্যবসায়ীকে টাকা দিতে বের হয়েছিলেন ধনেশ। রাত বারোটা বেজে গেলেও বাড়ি না ফেরায় বাড়ির লোকেরা মোবাইলে ফোন করেন। ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর যোগাযোগ করতে পারা যায়নি বলে দাবি পরিবারের। রাতভর বৃষ্টি হওয়ায় বাড়ির লোকেরা তাঁকে খুঁজতেও বের হতে পারেননি বলে জানান। শনিবার সকালে বাড়ি থেকে খানিকটা দূরে এক বাঁশ ঝাড়ের কাছে ধনেশের স্কুটি পাওয়া যায় বলে দাবি পরিবারের। দলের স্থানীয় নেতা কর্মীদের কাছেও খোঁজ নেওয়া হয়। খোঁজ না মেলায় পুলিশের কাছে নিখোঁজ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করেন বাড়ির লোকেরা। রবিবার সকাল দশটা নাগাদ ময়নাগুড়ি রোড এলাকার নিগমানন্দ আশ্রম লাগোয়া ধরলা নদী থেকে ধনেশের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মৃতের বড় ছেলে রঞ্জন রায় বলেন, ‘‘গ্রামেরই বাসিন্দা পম্পা সরকারের সঙ্গে বাবার সম্পর্ক ছিল। ওই মহিলা বাড়িতে মধুচক্র চালাতেন। ষড়যন্ত্র করেই বাবাকে খুন করা হয়েছে। পুলিশের কাছে ওই মহিলার বিরুদ্ধে অভিযোগও জানানো হচ্ছে।’’
তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল সহ সভাপতি সরেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘‘মাঝেমধ্যে মদ্যপান করতেন ধনেশ। এলাকার এক মহিলার বাড়িতেও নিয়মিত যাতায়াত ছিল তাঁর। ওই মহিলাও দলের এক জন সাধারণ কর্মী। প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ খুন করা হতে পারে ধনেশকে। পুলিশের কাছে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।’’ দলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, ‘‘মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।’’
ময়নাগুড়ি থানার আইসি তমাল দাস বলেছেন, ‘‘মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের পুলিশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পরে পুলিশ পরিবারের লোকেদের হাতে মৃতদেহ তুলে দিয়েছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে এক মহিলাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’