ধূপগুড়িতে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে অশান্তির অভিযোগ। — নিজস্ব চিত্র।
জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে। বন্ধের সমর্থনে সকাল সকাল পথে না নামায় এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ দলীয় কার্যালয়ে। পরে অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। তাঁদের বক্তব্য, বন্ধ সমর্থনের রণকৌশল স্থির করতে দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক চলছিল।
মঙ্গলবার ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজ’-এর ডাকে নবান্ন অভিযান সমর্থন করেছিল বিজেপি। সেই কর্মসূচিতে পুলিশি তৎপরতার বিরুদ্ধে বুধবার ১২ ঘণ্টার জন্য বাংলা বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে জলপাইগুড়ির নানা এলাকায় বন্ধের সমর্থনে পথে নামেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। ট্রেন আটকে বিক্ষোভ দেখানো হয়। স্টেশন চত্বরে দেওয়া হয় ধর্না। বিজেপির বন্ধের কারণে রাস্তায় যান চলাচল সকাল থেকেই বেশ কম জলপাইগুড়িতে। দোকানপাটও তেমন খুলতে দেখা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে ধূপগুড়ির এক কর্মীকে দলের কার্যালয়ে মারধর করা হয়েছে বলে শোনা যায়।
ঘটনাস্থলে সাংবাদিকেরা পৌঁছলে দলীয় কার্যালয়ের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভিতর থেকে বচসার শব্দ শোনা যাচ্ছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল থেকে বন্ধের সমর্থনে পথে নামার কথা ছিল দলের সকল কর্মীর। কিন্তু বিজেপির এক কর্মীকে সকাল থেকে পাওয়া যায়নি। বেলার দিকে তিনি দলীয় কার্যালয়ে পৌঁছন। এতেই ক্ষুব্ধ হন দলের বাকিরা। ওই কর্মীর সঙ্গে বাকিদের বচসা শুরু হয়। দলীর কার্যালয়ে ধস্তাধস্তিও হয়েছে কর্মীদের মধ্যে। সাংবাদিকদের পৌঁছতে দেখেই তড়িঘড়ি দলীয় কার্যালয়ের প্রবেশদ্বার বন্ধ করে দেন কর্মীরা।
গোষ্ঠী কোন্দলের অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় বিজেপি নেতা চন্দন দত্ত বলেন, ‘‘কোথাও কোনও ঝামেলা হয়নি। বিজেপির হয়ে আন্দোলন করার জন্য কর্মীরা উদগ্রীব হয়ে আছেন। বন্ধে সর্বাত্মক সমর্থনের জন্য আরও মিছিল করা দরকার, এটাই সকলে বলছেন। বিজেপি ঐক্যবদ্ধ দল, আমাদের মধ্যে কোনও বচসা নেই। দু’এক জনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হতে পারে, তবে সেটা রাজনৈতিক নয়।’’ দলীয় কার্যালয়ের দরজা বন্ধ করা নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘‘আমরা বন্ধ সফল করার জন্য রণকৌশল ঠিক করতে কার্যালয়ে বৈঠক করছিলাম, তাই দরজা বন্ধ করা হয়েছে।’’
বিজেপির যে কর্মীকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ, তিনিও প্রকাশ্যে এ কথা স্বীকার করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘এরকম কিছু হয়নি। রাজনৈতিক কৌশল ঠিক করতে দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা হচ্ছিল। বন্ধ সফল করতে কোথায় কী কর্মসূচি হবে, সেটা ঠিক হচ্ছিল।’’
বিজেপির এই গোষ্ঠীকোন্দলকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। শাসকদলের এক স্থানীয় নেতা বলেন, ‘‘যা হয়েছে, স্বাভাবিক। বিজেপির মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। কেউ চাইছেন বন্ধ হোক, কেউ চাইছেন বন্ধ না হোক। নিজেরাই মারামারি করছেন। গোটা রাজ্যে বিজেপির যা হাল, ধূপগুড়িতেও তার ব্যতিক্রম নেই। আমি ওদের সুস্থতা কামনা করছি। ওঁরা নিজেদের ঘর সামলাতে পারেন না, নবান্ন অভিযান করবেন কী করে? আগামী দিনে ওঁদের অবস্থা আরও খারাপ হবে।’’