সংবর্ধনা: নতুন সাংসদের হাতে ফুলের তোড়া তুলে দিচ্ছেন দলের কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র
চা বাগানকে যে আলাদা করে গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপি, সেটা সোমবার স্পষ্ট করে দিলেন সদ্য নির্বাচিত সাংসদরা। এক দিকে যখন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা গ্রাসমোর বাগানের মালিক ও শ্রমিকপক্ষকে নিয়ে বৈঠক করলেন, অন্য দিকে জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায় ডিবিসি রোডে দলীয় কার্যালয়ে দাঁড়িয়ে পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, ‘‘আমি দেখেছি, ছোট ছোট ঘরে চা শ্রমিকদের ঠাসাঠাসি করে থাকতে হয়। এমনটা চলবে না। আমরা প্রতিটি চা বাগানে শ্রমিক আবাসনের জরাজীর্ণ অবস্থা বদলে দেব। দেখব, যাতে শ্রমিকরাও স্বাস্থ্যকর ভাবে থাকতে পারেন।’’ রাজ্য সরকার এর আগে চা শ্রমিকদের জমির পাট্টা দেওয়ার ঘোষণা করেছিল। চা বাগানের জমিতে আইনগত ভাবে তা সম্ভব নয়। তার পাল্টা শ্রমিক আবাসনের হাল ফেরানোর আশ্বাস দিয়ে বিধানসভা ভোটে বিজেপি চা বলয়ে এগিয়ে থাকতে চাইছে বলেই স্থানীয় লোকজনের দাবি।
দলের দাবি, এ দিনই আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ বৈঠক করে একটি চা বাগান খোলার ব্যবস্থা করেছেন। জলপাইগুড়ি জেলার চা বাগান অধ্যুষিত মালবাজার, ধূপগুড়ি এবং ময়নাগুড়ি বিধানসভায় বিজেপি প্রার্থী জয়ন্ত রায় অনেক ভোটে এগিয়ে ছিলেন। সেই চা বলয়ে শুধু আবাসন নয়, চা শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিয়েও কাজ করতে চান পেশায় চিকিৎসক জয়ন্ত।
সাংসদের কথায়, “প্রতিদিনই লোকসংখ্যা বাড়ছে। এর জেরে চা বাগান-সহ বেশ কিছু এলাকায় একটি ঘরে একাধিক মানুষ বসবাস করে বাধ্য হয়ে। রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সার্বিক ভাবে চা শ্রমিকদের স্বাস্থ্যে নজর দিতে হবে।’’ জলপাইগুড়ি জেলায় কেন্দ্রীয় হাসপাতাল তৈরির জন্যও আর্জি জানাবেন বলে এ দিন দাবি করেছেন। সাংসদ ফিরতেই এ দিন পার্টি অফিসে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। দলের কর্মী-সমর্থকরা ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন এবং সাধারণ বাসিন্দারাও সাংসদের সঙ্গে দেখা করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
চা বলয়ের সঙ্গে কৃষির কথাও জানিয়েছেন সাংসদ। জলপাইগুড়ির কৃষি বলয় থেকেও লোকসভায় বিপুল ভোট পেয়েছিল বিজেপি। বিশেষ করে সঙ্ঘের প্রচারকরা কৃষি বলয়েই কাজ করেছেন। তাঁদেরও নানা প্রস্তাব বিজেপি নেতৃত্বের কাছে জমা পড়েছে বলে সূত্রের খবর। সাংসদ এ দিন বলেন, “কৃষকদের জমির ফসল রাখার পর্যাপ্ত পরিকাঠামো নেই। এই বিষয়ে আরও হিমঘর তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে।’’ উন্নয়নমূলক কাজের ক্ষেত্রে প্রাক্তন সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মণের পরামর্শ নেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। জলপাইগুড়ি জেলা বরাবর রাজনৈতিক সৌজন্যের জন্য পরিচিত। সেই ধারা তিনি জারি রাখতে চান বলে জানিয়েছেন জয়ন্ত।