ইস্তফা রূপকের। নিজস্ব চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের হাথরস কাণ্ডের প্রতিবাদে ও দলের জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন কালিয়াগঞ্জের বিজেপি নেতা রূপক রায়। শনিবার দুপুরে রায়গঞ্জে জেলা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে ওই কথা ঘোষণা করেন তিনি। এ দিনই তিনি দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা দাবি করে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রসাদ নাড্ডার কাছে চিঠিও পাঠিয়েছেন। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কালিয়াগঞ্জে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন দলের রাজবংশী সম্প্রদায়ের নেতা তথা কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার প্রাক্তন সংযোজক রূপক। তিনি বলেন, “এখনই অন্য দলে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছি না। উত্তরবঙ্গের রাজবংশী ও পিছিয়ে পড়া বাসিন্দাদের উন্নয়নের স্বার্থে নতুন দল তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।”
বিজেপির জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী বলেন, “দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে কয়েক মাস আগে রূপককে শোকজ় করা হয়েছিল। তিনি সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। তিনি বিজেপি ছাড়ায় দলের ক্ষতি হবে না।”
রূপকের দাবি, তিনি দীর্ঘ দিন ধরে কালিয়াগঞ্জের রাজবংশী সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের বিভিন্ন অধিকারের স্বার্থে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অথচ উত্তরপ্রদেশে বিজেপি ক্ষমতায় থাকাকালীন হাথরসে দলিত তরুণীকে গণধর্ষণ করে খুন করা হল। বিজেপির জেলা নেতৃত্ব ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি শুরু করেছে। জেলায় রাজবংশী বাসিন্দাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন, তাঁদের ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় বিজেপির কোনও আন্দোলন নেই। তিনি বলেন, “রাজবংশী বাসিন্দাদের প্রতিনিধি হিসেবে দীর্ঘ দিন ধরে আমি দলের অন্দরে এ সবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু পরিস্থিতি না বদলানোয় আমি দল ছাড়তে বাধ্য হলাম।”
বিজেপির জেলা নেতৃত্বের অভিযোগ, রূপক গত বছর কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হতে না পেরে দলীয় প্রার্থী কমলচন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে প্রার্থীপদ নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন। এর পরেই জেলা নেতৃত্ব তাঁকে শোকজ় করেন। বিশ্বজিৎ বলেন, “সম্প্রতি, রূপকবাবু দলের জেলা বা মণ্ডল কমিটিতে জায়গা পাননি। সেই কারণে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তিনি দলের প্রার্থী হতে পারবেন না আঁচ করে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন।”
রূপকের পাল্টা দাবি, তিনি দলের জেলা ও কালিয়াগঞ্জের নেতাদের অন্যায় ও স্বজনপোষণের প্রতিবাদ করায় বিশ্বজিৎ তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন।