অনীত থাপা এবং বিনয় তামাং। ফাইল ছবি।
দার্জিলিং পুরসভায় পালাবদল নিয়ে জল্পনার মধ্যেই তৃণমূল ছাড়লেন বিনয় তামাং। যে ভাবে ‘ঘুরপথে’ হামরো পার্টির ক্ষমতা কেড়ে পুরসভার দখল নিল অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা, তারই প্রতিবাদে তিনি পদত্যাগ করলেন বলে নিজেই জানিয়েছেন বিনয়। রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে বিবৃতিতে তাঁর দাবি, পাহাড়ে গণতন্ত্র বিপন্ন। যে ভাবে দার্জিলিং পুরসভার হাতবদল হল, তা দেশের ঐক্য ও সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত। পাশাপাশিই, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ‘দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছেন বিনয়।
জল্পনা আগে থেকেই ছিল। বুধবার হামরো পার্টিকে হারিয়ে দার্জিলিং পুরসভায় আস্থাভোট জিতে নিল অনীতের ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। অনীতের পাশে দাঁড়িয়েছেন পাহাড়ের দুই তৃণমূল কাউন্সিলরও। ক্ষমতা হারিয়ে জিটিএ-র মতো দার্জিলিং পুরসভাতেও প্রধান বিরোধী দলের আসনে ঠাঁই হল অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টির।
দার্জিলিং পুরসভায় মোট ৩২টি আসন। তার মধ্যে ১৮টি আসনে জিতে বোর্ড দখল করেছিল হামরো পার্টি। অন্য দিকে, অনীতের প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ৯টি, তৃণমূল ২টি, বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা জিতেছিল ৩টি আসনে। যদিও এর পরে জিটিএ ভোটে লড়ার জন্য প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার এক কাউন্সিলর ইস্তফা দেন। সেই আসনে এখনও ভোট হয়নি। ফলে, কাউন্সিলরের সংখ্যা কমে হয় ৩১। সম্প্রতি হামরো পার্টির ৫ কাউন্সিলর যোগ দিয়েছেন প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায়। তাতে অনীতের দলের কাউন্সিলরের সংখ্যা বেড়ে হয় ১৪। এর মধ্যে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়, প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সঙ্গে মিলে তারা পুরবোর্ড গঠন করবে। বুধবারের আস্থাভোটে ৩১ জনের মধ্যে ১২ জন কাউন্সিলর সমর্থন করেছে হামরো পার্টিকে। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে গুরুংয়ের দলের ৩ কাউন্সিলরও। অন্য দিকে, তৃণমূলের ২ কাউন্সিলর এবং প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার ১৪ জন কাউন্সিলর মিলে অনীতকে সমর্থন জানিয়েছেন। সেই অঙ্কেই এ বার দার্জিলিং পুরসভার দখল নিয়েছে অনীতের দল।
ঠিক তার পরেই বিবৃতি প্রকাশ করে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন প্রাক্তন জিটিএ প্রধান বিনয়। সেই সঙ্গে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণও শানিয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, পাহাড়ে ‘অগণতান্ত্রিক’ কার্যকলাপ চালাচ্ছে শাসকদল।
বিনয়ের পদত্যাগ নিয়ে দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি (পাহাড়) শান্তা ছেত্রী বলেন, ‘‘বিনয় আমাকেও ওঁর পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। আমি সেটা দলের হাইকমান্ডের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার দলই নেবে। আমার এ বিষয় নিয়ে আর কিছু বলার নেই।"