জনসংযোগ: সিংমারির দলীয় অফিসে বিমল গুরুং। নিজস্ব চিত্র।
প্রায় চার বছর পর দার্জিলিঙের সিংমারির দফতর খুলে বসা শুরু করেছেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুং। গত দু’দিন ধরে দফতরে বসে দার্জিলিং শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বসে যাওয়া পুরনো নেতানেত্রী এবং বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন গুরুং। গত শনিবার একদল প্রাক্তন মহিলা মোর্চার সদস্য ফের সক্রিয় হওয়ার জন্য গুরুংয়ের উপস্থিতিতে দলে যোগ দেন। ছোট ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা গুরুংয়ের সঙ্গে দেখাও করেন। গুরুংয়ের কথায়, ‘‘আমি পাহাড়বাসীর অভিভাবক। এই দফতরের সঙ্গে অনেক সংগ্রামের কথা জড়িয়ে আছে। এখন আগের মতোই সিংমারির দফতর মোর্চার সদর দফতর হিসেবে পরিচিত হবে। আমি নিয়মিত অফিসে থাকব।’’
মোর্চার অন্দরের খবর, অনীত থাপা দার্জিলিঙে বসে নতুন দল তৈরি করছেন। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর নতুন দলের ঘোষণার দিনক্ষণ জানিয়ে দিয়েছেন। রোজই শৈলশহরের বিভিন্ন স্তরের লোকজনের সঙ্গে অনীত যোগাযোগ করছেন। বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, প্রবীণ নাগরিকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। মুখে কিছু না বললেও তাঁর প্রতি দার্জিলিঙের বিভিন্ন মহলের সমর্থন দেখে গুরুং শিবিরের চিন্তা বেড়েছে। বিশেষ করে, কার্শিয়াং থেকে দার্জিলিং এসে অনীত দল গোছাতে শুরু করতেই নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। আবার জিএনএলএফের বিক্ষুব্ধ নেতা অজয় এডওয়ার্ড এবং মোর্চাত্যাগী বিনয় তামাং নিজের মতো দার্জিলিঙের অনুগামীদের জড়ো করছেন। সেখানে গুরুংয়ের বাড়ি পাতলেবাস থেকে দল চালালে শহরে নিজেদের উপস্থিতি রাখা ছাড়াও সংগঠনকে একজোট করার প্রচেষ্টা মার খেতে পারে বলে মনে করছেন গুরুং।
গুরুংপন্থী মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেছেন, ‘‘অনীতকে আমাদের শুভেচ্ছা। মোর্চাই পাহাড়ের প্রধান দল। অনীত আমাদের কোনও ক্ষতি করতে পারবেন না।’’
মুখে গুরুং-রোশনেরা এ সব বললেও পরিস্থিতির গতিপ্রকৃতি নিয়ে ভিতরে নানা আলোচনা-পর্যালোচনা চলছে। বিশেষ করে, গুরুংয়ের দীর্ঘদিনের সহকর্মী, দার্জিলিং মহকুমার মোর্চার প্রাক্তন সভাপতি তিলকচন্দ্র রোকা অনীত থাপার শিবিরে যোগ দিয়েছেন। জিএনএলএফের অন্দরে গোলমাল বাড়তে থাকায় চাউর হয়েছে, অজয় এডওয়ার্ডের সঙ্গে অনীত নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলছেন। পাশাপাশি, কালিম্পঙে হরকা বাহাদুরকে দল যোগ দেওয়ার প্রস্তাব প্রকাশ্যে এসেছে। তৃণমূলের একাংশও অনীতের দলে সরাসরি যেতে পারেন। তাই ৯ সেপ্টেম্বরের পর দার্জিলিং শহরে বসেই অনীত নতুন দল জোরদার ভাবে চালাবেন তা পরিষ্কার। সেখান এখনই শহরে এসে কাজ শুরু না করলে সমস্যা হতে পারে বলে বুঝে যান গুরুং।
২০১৭ সালে পাহাড়ের আন্দোলেন সিংমারির দফতর পুলিশ বন্ধ করে দেয়। গুরুং পাহাড় ছাড়ার পর এই অফিস থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয় বলে অভিযোগ। তালাবন্ধ দফতরটি পড়েছিল। কয়েকদিন আগে আইনি জটিলতা মেটায় গুরুং দ্রুত সেটি সংস্কার করিয়ে বসা শুরু করেছেন।