Bimal Gurung

Bimal Gurung: অনশন ভঙ্গ, না রণে ভঙ্গ? ‘উন্নত’ চিকিৎসার জন্য এ বার সিকিমে গুরুং

১০৩ ঘণ্টা টানা অনশনের জেরে রবিবার অসুস্থ হয়ে পড়েন গুরুং। রাতেই তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় দার্জিলিং জেলা হাসপাতালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২২ ১৭:০০
Share:

বিমল গুরুংকে নিয়ে যাওয়া হল সিকিমে। নিজস্ব চিত্র

টানা ১০৩ ঘণ্টা ধরে অনশনের পর হাসপাতালে ভর্তি মোর্চা প্রধান বিমল গুরুং। সোমবার তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে সিকিমে। হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় গুরুংয়ের পক্ষে অনশন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে ফিরে এসে আবার তিনি অনশনে বসবেন কি না তা নিয়ে ধোঁয়াশা বজায় রেখেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। তবে এর পিছনে কৌশল দেখছে পাহাড়ের অন্য রাজনৈতিক দলগুলি। তাদের মতে, এটা আসলে একই সঙ্গে অনশন ভঙ্গের পাশাপাশি রণে ভঙ্গ দেওয়ার কৌশলও বটে।রবিবার অসুস্থ হয়ে পড়েন গুরুং। রাতেই তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় দার্জিলিং জেলা হাসপাতালে। এর পর মোর্চার তরফে প্রাথমিক বিবৃতি ছিল, গুরুং অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে তাঁকে হাসপাতালে ‘স্থানান্তরিত’ করা হয়েছে। এরই মধ্যে সোমবার গুরুংকে ‘উন্নত চিকিৎসা’র জন্য নিয়ে যাওয়া হয় সিকিমে।

Advertisement

অনশন নিয়ে মোর্চার ব্যাখ্যা অবশ্য মানতে নারাজ পাহাড়ের অন্য রাজনৈতিক দলগুলি। হামরো পার্টির নেতা প্রমস্কর ব্লনের বক্তব্য, ‘‘বিমল গুরুংয়ের অনশনের কোনও প্রভাব পড়েনি পাহাড়ে। সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য নেই। মোর্চাও অনশন তুলে নিতে চাইছিল। তাই শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে অনশন তুলে নিলেন মোর্চা-নেতা। সরকারের পক্ষেও কোন বার্তাই মেলেনি। বিমলের চ্যালেঞ্জের কোনও প্রভাব পড়েনি রাজ্যের উপর।’’

কিছুটা একই সুর ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনিত থাপার গলায়। তিনি বলেন, ‘‘এটা ওদের দলের ভিতরের ব্যাপার। আমরা আর কী বলব। রাজ্যের তরফে মন্ত্রী এসেছিলেন। তিনিও ওদের অনুরোধ করেছিলেন অনশন ওঠানোর জন্য। আবার তাঁর দলের কর্মীরাও বিমল গুরুংয়ের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তাভাবনা করে অনশন তুলে নিতে বলেছিলেন। সবটাই বোঝা যায়।’’

Advertisement

অন্য দিকে, দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের সভাপতি (পাহাড়) শান্তা ছেত্রী নাম না করে বিমল এবং বিজেপিকে নিশানা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘পাহাড়ে ভোট এলেই কিছু দল এবং তার নেতাদের নাটক শুরু হয়ে যায়। আমি কারও নাম বলছি না। অনেকেই আছেন যাঁরা কোনও কাজ করেন না। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কাজের মধ্য দিয়ে পাহাড়-সহ রাজ্যের উন্নয়ন করেছেন। মানুষ তাঁর পাশে আছেন। পাহাড়ের মানুষ অশান্তি চান না। বিমল গুরুংয়ের পাশেও সরকার রয়েছে। সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেই তাঁকে জেলা হাসপাতালে বা সেখান থেকে সিকিম নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’

আগামী ২৬ জুন জিটিএ নির্বাচন। পাহাড়ের রাজনৈতিক মহলের একটি অংশের মতে, তার আগে রাজ্যের উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছিলেন গুরুং। শনিবার গুরুংয়ের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ এবং আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী বুলু চিক বড়াইক। পর দিনই অনশন মঞ্চে পৌঁছে যান বিজেপির সাংসদ এবং বিধায়করা। আবার জিএনএলএফের অন্যতম নেতা নীরজ জিম্বাও গুরুংয়ের সঙ্গে দেখা করেন। সিংমারির দফতরে বৈঠকও করেন নীরজ। তবে সেই বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে কোনও পক্ষই মুখ খোলেনি। ঘটনাচক্রে এর পর রাতেই গুরুংকে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, গুরুংয়ের এ ভাবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আসলে অনশনভঙ্গেরই নামান্তর মাত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement