—ফাইল চিত্র।
পাহাড়ে এখনও না ফিরলেও কলকাতা ও লাগোয়া শহরতলিতে বসে টানা দলীয় বৈঠক করে যাচ্ছেন মোর্চা নেতা বিমল গুরুং। মোর্চা সূত্রের খবর, গত সাতদিনে দফায় দফায় পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্স থেকে নেতা-কর্মীদের ডেকে পাঠানো হচ্ছে কলকাতায়। এর আগে কর্মীদের নিয়ে তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতারা বেশি বৈঠক করলেও গত ২০ নভেম্বর কলকাতার পাশেই একটি ভবনে অন্তত ১০০ জন সক্রিয় নেতা-নেত্রীকে নিয়ে গুরুং নিজে বৈঠক করেছেন। সঙ্গে ছিলেন রোশন গিরিও।
আগামী বিধানসভা ভোটে নিজেদের রণকৌশলের কথা বলা হলেও মোর্চার শিবির বদল, ব্লকে ব্লকে ও সমষ্টিতে ফের দফতর খোলা, এলাকায় গুরুংয়ের ছবি দেওয়া পতাকা তোলা, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি, মিছিল, মিটিং কমিটি গড়তে নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, সময়ে সময়ে পাহাড়ে পোস্টার সাঁটতেও বলা হয়েছে। তবে বিমল বৈঠক নিয়ে মন্তব্য করেননি। বিমলপন্থী মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন শুধু বলেছেন, ‘‘আগামী বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে হারাতে যা যা করণীয় আমরা করব। সেই প্রস্তুতি চলছে।’’
গরুং-ঘনিষ্ঠ এক নেতা জানাচ্ছেন, সভাপতি তাঁদের সঙ্গে এখন নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। গত তিন বছর যোগাযোগ ছিল না বললেই চলে। তাতে গুরুং অনুগামীদের একটা বড় অংশ বিনয় তামাং, অনীত থাপার দিকে চলে গিয়েছে। একটা অংশ মামলার গ্রেফতারের ভয়ে পাহাড়ের বাইরে। আর একটা অংশ কার্যত চুপচাপ বসে গিয়েছিল। এখন সবাইকে একজোট করে নিজের মাটি শক্ত করাটাই এখন বিমলের কাছে চ্যালেঞ্জ।
তিন বছর পর, ২১ অক্টোবর গুরুং কলকাতায় প্রকাশ্যে আসেন। এই মাসখানেক ধরে একেবারে তলানিতে থাকা গুরুংয়ের পাহাড়ের সংগঠন অনেকটাই সামনে এসেছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, বিনয়-অনীতদের তুলনায় এখনও লোকবল কম থাকলেও ধীরে ধীরে তা বাড়ছে। গত শনিবারই দার্জিলিঙের বিনয়পন্থী এক নেত্রী-সহ দু’জন ফের গুরুংকে সমর্থন করে পুরনো শিবিরে ফেরার কথা ঘোষণা করেন। অনীতের খাসতালুক বলে পরিচিত কার্শিয়াঙে গুরুংপন্থীরা বৈঠক করেছেন। আবার দার্জিলিঙে এ দিন গুরুংয়ের সঙ্গে থাকা এক পুরসভার কাউন্সিলর নিজের নির্বাচনী এলাকায় মিছিলও করেন। ধীরে ধীরে এই ছবি মিরিক, কালিম্পং-সহ বিভিন্ন এলাকায় চোখে পড়ছে।
তবে বিনয়-অনীতদের তরফে পাল্টা প্রতিক্রিয়া বা শক্তি প্রদর্শন এখনই করা হচ্ছে না। অসুস্থ বিনয় শিলিগুড়িতে নার্সিংহোমে আপাতত ভর্তি। অনীত পাহাড়ে থেকে সংগঠনের লোকজনের সঙ্গে রোজই ঘরোয়া বৈঠক করে চলেছেন। মোর্চা সূত্রের খবর, আপাতত স্থির হয়েছে, প্রতিটি গ্রাম-শহর এবং ব্লকে নজরজারি চলবে। কারা শিবির বদল করছেন বা গুরুং শিবিরে যোগাযোগ রাখছেন তা দেখা হচ্ছে। এর পরে নিজেদের সেখানে সাংগঠনিক বৈঠক করে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা হচ্ছে।