পবন চামলিঙের হাত ধরে সিকিম ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টে যোগ দিলেন ভাইচুং ভুটিয়া। নিজস্ব চিত্র।
সিকিমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিঙের দলে (সিকিম ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট বা এসডিএফ) যোগ দিয়ে কারও নাম না করে ইডি নিয়ে তোপ দাগলেন প্রাক্তন ভারতীয় ফুটবল তারকা ভাইচুং ভুটিয়া। বৃহস্পতিবার দুপুরে দক্ষিণ সিকিমের রাবাংলার একটি জনসভায় চামলিঙের হাত থেকে দলীয় পতাকা নেন ভাইচুং। কারও নাম না করে তিনি বলেন, ‘‘দিল্লির ‘বস’দের তুষ্ট করার কাজ চলছে। ধর্মনিরপেক্ষতা হারাচ্ছি আমরা। বিভিন্ন ভাবে ইডি-র ভয় দেখানো হচ্ছে। ও সব আমরা ভয় পাই না। আপনারা একটি ইডি ছাড়লে, আমরা আপনাদের পিছনে ১০টা ইডি ছেড়ে দেব।’’ যদিও সিকিমের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিংহ তামাং বা তাঁর দল সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চার তরফে ভাইচুংয়ের বক্তব্য নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতার কথায়, ‘‘ভাইচুং এত দিন চামলিঙের বিরুদ্ধে প্রচার করতেন। এখন দু’জনে হাত মেলালেন। সিকিমের মানুষ সব দেখেছে বলেই, চামলিং-সরকার উল্টে দিয়েছে।’’
সিকিমের বর্তমান রাজ্য সরকারকে উৎখাতের ডাক দিয়ে পবন চামলিঙের দলে যোগ দেন ভাইচুং। তাঁর দাবি, সিকিমের মানুষের কন্ঠরোধের চেষ্টা শুরু হয়েছে। দুর্নীতি, আইন-শৃঙ্খলার সমস্যায় রাজ্য ডুবছে। সিকিমের পরিবর্তন জরুরি হয়ে পড়ছে। পবন চামলিঙের অভিজ্ঞতার সঙ্গে তরুণ প্রজন্মের মেলবন্ধনে আগামীতে লড়াই হবে বলে ভাইচুং জানিয়েছেন।
এ দিন রাবাংলায় জনসভার আগে নতুন দলীয় দফতরেরও উদ্বোধন হয়েছে। ঘন্টাখানেকের ভাষণে ভাইচুং উন্নয়ন থেকে বর্তমান রাজ্য সরকারের সমালোচনায় সরব হন। তিনি জানান, পবন চামলিঙের আমলে রাজ্য সরকারের ঋণ ছিল ছয় হাজার কোটি টাকা। আর সাড়ে চার বছরে গোলে সরকার সিকিমবাসীর ঋণের বোঝা ২০ হাজার কোটিতে পৌঁছে দিয়েছে। কোভিড তহবিল বা তিস্তার বিপর্যয়ের পরে তহবিলের হিসাব কেউ জানে না। ভাইচুঙের কটাক্ষ, ‘‘তিস্তার বিপর্যস্ত পরিবারগুলিকে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। আর শাসক দলের নেতা-নেত্রীরা নতুন ১০-২০ লক্ষ টাকার গাড়ির নিয়ে ঘুরছেন। রাজ্য সরকারের বাজেট থেকে মনে হয় শাসক দলের তহবিল বেশি বাড়ছে।’’
পবন চামলিঙের হাত থেকে পতাকা নিয়েই নিজেই প্রথমে এ দিন দুঃখপ্রকাশ করেন ভাইচুং। তিনি বলেন, ‘‘আমি ২০১৯ সালে চামলিং সরকারের পরিবর্তন চেয়ে প্রচার করেছি। আমার ভুল হয়েছিল। এ বার তা শুধরে নেওয়ার সময় এসেছে।’’ ভাইচুংয়ের প্রশংসা করেছেন পবন চামলিংও। তিনি বলেন, ‘‘অভিজ্ঞতা ও তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে আমরা আগামী বছর বিধানসভা ভোটে লড়াই করব। সেখানে ভাইচুং বড় ভূমিকা নেবে।’’
২০১১ সালের পরে ভাইচুং তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। ২০১৪ সালে দার্জিলিং লোকসভা আসন এবং ২০১৬ সালে শিলিগুড়ি বিধানসভা আসনে লড়াই করে হারেন। পরে, তৃণমূল ছাড়ার ঘোষণা করে ‘হামরো সিকিম’ বলে নিজের দল তৈরি করেন। এ দিন সে দল পবন চামলিঙের দলে মিশে গিয়েছে।