রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে বন্ধ ছিল আউটডোর পরিষেবা।
গত তিনদিন ধরে কানের ব্যথায় ভুগছেন ইটাহারের দুর্গাপুর এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ ইসমাইল। সোমবার রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে এসেছিলেন ইসমাইল। তাঁর দাবি, ইএনটি বিশেষজ্ঞকে দেখানোর জন্য তিনি বেলা ১১টা থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা করেন। আরও প্রায় ৩০ জন রোগী সেখানে অপেক্ষা করছিলেন। দুপুর দেড়টা নাগাদ এক স্বাস্থ্যকর্মী এসে জানান, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক আসবেন না।
এ কথা শুনে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন অপেক্ষমান রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। ইসমাইলের কথায়, ‘‘চিকিৎসক যে আজ বসবেন না, তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আগে থেকে জানানো উচিত ছিল। বহির্বিভাগের কাউন্টারে টিকিট কাটার সময়েও তো কর্মীরা জানালেন না!’’ করণদিঘির ছাগলকাটি এলাকার বাসিন্দা আটমাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ অনিতা বর্মণও এসেছিলেন বহির্বিভাগে। তিনি বলেন, ‘‘কোনও প্রসূতি বিশেষজ্ঞকে দেখানোর জন্য বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ লাইনে দাঁড়াই। সেইসময় এক চিকিৎসক প্রসূতিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ওষুধ লিখে দিচ্ছিলেন। কিন্তু লাইনে আমার আগে প্রায় সাত-আটজনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর উনি বহির্বিভাগ ছেড়ে চলে যান। এরপর আমি এবং আরও প্রায় ২০ জন প্রসূতি দুপুর ২টো পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও ওই চিকিৎসক বহির্বিভাগে আসেননি। ফলে আমরা ফিরে যাচ্ছি। এই দুর্ভোগ কতদিন চলবে, কে জানে!’’
এনআরএস-কাণ্ডের প্রতিবাদে এ দিন আইএমএ-র ডাকে বহির্বিভাগ বন্ধ রেখে কর্মবিরতিতে সামিল হন হাসপাতালের বেশিরভাগ চিকিৎসক। ফলে এ দিন বেশিরভাগ বহির্বিভাগ বন্ধ ছিল। রোগীদের অভিযোগ, ইএনটি, দাঁত, চোখ ও অর্থোপেডিক রোগের বহির্বিভাগ পুরোপুরি বন্ধ ছিল। শল্য, মেডিসিন, প্রসূতি, শিশু ও চর্মরোগের বহির্বিভাগে চিকিৎসকেরা হাজিরা দিয়ে হাতেগোনা কয়েকজন রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ওষুধ লিখে দিয়ে চলে যান। ফলে কয়েকশো রোগীর দুর্ভোগ চরমে ওঠে। হাসপাতালের সুপার গৌতম মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘কিছু চিকিৎসক এ দিন বহির্বিভাগে হাজির না হওয়ায় রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। কয়েকজন চিকিৎসক বহির্বিভাগে হাজির হলেও বেশিরভাগ রোগীকে না দেখে চলে গিয়েছেন বলে খবর পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে না দেখে কোনও মন্তব্য করা সম্ভব নয়।’’