ছবি: সংগৃহীত।
বাগডোগরা বিমানবন্দরের এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি), রানওয়ের অ্যাপ্রোচ লাইট, আইএলএস— সবই নিয়ন্ত্রণ করে বায়ুসেনা। সব সময় তা ব্যবহার হয় না বলে নতুন করে অভিযোগ সামনে এসেছে। এতে বিপাকে পড়ছে বিমান সংস্থাগুলি। ভোগান্তি বাড়ছে হাজার হাজার যাত্রীর। খোদ শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বিমানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে সমস্যার কথা জানিয়েছেন। বর্ষাকালে জোর ও টানা বৃষ্টিতে বাতিল হয় একের পর এক বিমান। শীতের সময় আবার কুয়াশা বাড়তেই বাতিলের সংখ্যা বাড়ে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন মহল থেকে গোটা পদ্ধতি বদলের দাবি উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে প্রস্তাবিত নতুন টার্মিনাল-সহ বিমানবন্দরে তথ্য-প্রযুক্তি এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া বা এএআই-এর হাতে রাখা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বাগডোগরা সামরিক বিমানবন্দর। রানওয়ে থেকে এটিসি, সবই বায়ুসেনার নিয়ন্ত্রণে। এ ছাড়া প্রতিকূল আবহাওয়া, কম দৃশ্যমানতা, রাতের বিমান ওঠানামার জন্য ইন্সট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম বা আইএলএস, লোকালাইজ়র, গাইড পাথও বায়ুসেনা দেখভাল করে। সামরিক বাদে দেশের সমস্ত বিমানবন্দরে এ সব পরিষেবা এএআই নিয়ন্ত্রণ করে। এর বেশ কিছু পরিষেবা কিছু সমস্যার জন্য বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ। তেমনই, রানওয়ের অ্যাপ্রোচ লাইটও খারাপ হয়ে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই সমস্ত কারণে আবহাওয়া সামান্য খারাপ হলেই বিমানবন্দরের দৃশ্যমানতা কমে যায়। পাইলটেরা বাগডোগরার আকাশে বিমান নিয়ে এসেও ঘুরে ফেরত যান।
এই অবস্থায় আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের কাজ শুরু হচ্ছে। শতাধিক কোটি টাকা বরাদ্দও হয়েছে। তিন বছরের মধ্যে বিমানবন্দরের চেহারাই পাল্টে যাওয়ার কথা। সেখানে, বিমান ওঠানামার অবস্থা নিয়ে এখনও চিন্তিত এএআই কর্তারা। এএআই-এর এক কর্তার কথায়, ‘‘সমস্যার বিষয়টি দিল্লি অবধি গিয়েছে। সামরিক বিমানবন্দরের জন্য কিছু অসুবিধা রয়েছে। কিন্তু ওই পরিষেবাগুলি ২৪ ঘণ্টা চালু রাখা জরুরি। নতুন বিমানবন্দর টার্মিনাল তৈরির পর তো প্রচুর বিমান বাড়বে। সে দিকে নজর রেখেই আলোচনা শুরু হয়েছে।’’
বিমান সংস্থাগুলি সূত্রের খবর, গত দশ দিনে ৫৮টি বিমান বাতিলের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ২৮ জুন ২৬টি বিমান বাতিল হয়। বিপাকে পড়েন বহু যাত্রী। পরের দিন, একই কারণে বাতিল হয়েছে ৭টি বিমান। বাগডোগরা বিমানবন্দর দেশের প্রথম ১০টি বাণিজ্যিকভাবে সফল বিমানবন্দরের তালিকায় রয়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ, সেখানে এমন নিম্নমানের পরিষেবার কথা ভাবা যায় না! রাজ্যের ছোট চা বাগান মালিকদের সংগঠনের অন্যতম কর্তা বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এটা তো পুরো ছেলেখেলা চলছে। বৃষ্টির জন্য বিমান বাতিল, এটা কোথায় হয়! বিমান মন্ত্রকের অবিলম্বে বিষয়টি দেখা দরকার।’’
টানা বিমান বাতিলের দিনে বিপাকে পড়েছিলেন পর্যটন সংগঠনের কর্তা সম্রাট সান্যালও। তিনি বলেন, ‘‘আধুনিকীকরণে জোর দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, অথচ বিমান নামা-ওঠাই ঠিকমতো করানো যাচ্ছে না। এএআই-কে পদ্ধতি ঠিক করতেই হবে।’’