তল্লাশি: পরীক্ষা শুরু আগে। শনিবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
ভবিষ্যতে আর তাদের স্কুল থেকে বহিরাগত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের নথিভুক্ত করাতে চাইছেন না বাগডোগরা চিত্তরঞ্জন হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ বার স্কুলের তরফে পরীক্ষা দিতে যাওয়া বহিরাগত পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ১৮ জনের কাছ থেকে মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল শুভমায়া সূর্য নারায়ণ হাই স্কুলে। অভিযুক্তদের একাংশ পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে মোবাইলে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে বাইরেও পাঠিয়েছিল বলে অভিযোগ। গত মঙ্গলবারের এই ঘটনায় স্কুলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন শিক্ষকদের অনেকেই। অভিভাবকরাও বিষয়টি নিয়ে অসন্তুষ্ট।
ওই পরীক্ষার্থীদের জন্য বদনামের ভাগ কুড়োতে হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে শুভমায়া সূর্যনারায়ণ স্কুলের তরফেও। উত্তরবঙ্গের আর কোনও স্কুলে বহিরাগত পরীক্ষার্থীদের নথিভুক্ত করার ব্যবস্থা নেই। অন্য কেন্দ্র না থাকায় বহিরাগত পরীক্ষার্থীদের মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো এলাকা থেকে এখানে এসে পরীক্ষা দিতে আসতে হচ্ছে। পরীক্ষার্থীদের একাংশ জানাচ্ছেন, এ ভাবে দালাল চক্রের খপ্পড়েও পড়তে হচ্ছে। পরীক্ষার্থীদের কয়েকজন অভিযোগ করেছেন, চাকরিতে পদোন্নতির জন্য যাঁরা মাধ্যমিক পাশের চেষ্টা করছেন দালালরা তাঁদের কাছ থেকে সব কিছু ঠিক করে দেওয়ার নাম করে মোটা টাকা দাবি করছেন। পর্ষদের কর্তারা খোঁজ নিলেই বিষয়টি জানতে পারবেন বলে তাঁদের দাবি।
চিত্তরঞ্জন হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা তপতি হালদার বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন, প্রায় চার দশক ধরে এই স্কুলে বহিরাগত পরীক্ষার্থীদের নথিভুক্তকরণের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রথমে স্থানীয় বা আশপাশের বহিরাগত পরীক্ষার্থীরাই আসতেন। গত কয়েক বছর ধরে কখনও দেড়শো, কখনও দুশোর মতো পরীক্ষার্থী আসছেন। তাঁদের টেস্ট পরীক্ষা নেওয়া, নাম নথিভুক্ত করার মতো কাজ করার ক্ষেত্রে সমস্যাও রয়েছে। আমরা তাই এই ব্যবস্থা অন্যত্র করার আর্জি জানিয়েছি।’’ পর্ষদের উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক শাখার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক আনন্দমোহন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি দেখছি। কী করা যায় ভাবা হচ্ছে।’’
চিত্তরঞ্জন স্কুল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ স্কুলের বদনাম করার পিছনে চক্র থাকতে পারে। বিষয়টি যথাযথ তদন্ত হওয়া দরকার। পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে ঘটনা তদন্ত করে দেখা হবে। তা ছাড়া বহিরাগত পরীক্ষার্থীদের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোতেই কেন্দ্রের ব্যবস্থা করলে দালাল চক্রের প্রভাবের সমস্যা মেটানো সম্ভব হবে মনে করছেন শিক্ষকদের একাংশ।